গোলাকার চত্বরের চারপাশে জমে আছে ময়লা-আবর্জনা। চত্ত্বরের ভেতরে প্রায়ই স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন জিনিসপত্রও ফেলে রাখেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা বাদাম, চানাচুরসহ ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা সেখানে হকার খুলে বসেন। সম্প্রতি সেই চত্ত্বর দখল করে নিয়েছেন বিভিন্ন মোবাইলের সিমকার্ড বিক্রেতারা। দেখলেই মনে হবে এ যেন সিম কার্ড বিক্রির হাট। এ দৃশ্য বিয়ানীবাজার উপজেলার চারখাই বাজারে অবস্থিত শহীদ হুমায়ুন কবির চৌধুরী নাহিদ চত্বরের।

জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে বিয়ানীবাজার উপজেলার চারখাই পল্লী শাসন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থী, কলেজ ছাত্রলীগ নেতা এবং চারখাই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক শহীদ হুমায়ুর কবির চৌধুরী নাহিদ। প্রহসনমূলক নির্বাচন প্রতিহত করতে গিয়ে প্রাণ হারান ছাত্রলীগের মেধাবী নেতা নাহিদ। তার স্মৃতি রক্ষার্থে পূর্ব সিলেটের সবচেয়ে ব্যস্ততম এই চত্ত্বরের নামকরণ করা হয় ‘নাহিদ চত্ত্বর’ নামে। কিন্তু চত্ত্বরটি নামফলক স্থাপন এবং সৌন্দর্য বর্ধনের পর থেকে কোনোভাবেই হকার ও সিমকার্ড বিক্রেতাদের কবল থেকে দখলমুক্ত করা যাচ্ছে না।

স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, প্রশাসনিক কোন তৎপরতা না থাকায় প্রায় প্রতিদিনই চত্ত্বরটি দখল করে বসছেন তারা। চলতি শীত মৌসুমে তাদের দৌরাত্ম্য যেন আরও বেড়েছে। চারখাইয়ের নাহিদ চত্বরে প্রতিদিন বসছে সিম কার্ডের মেলা। এতে মানুষ সমাগমের কারণে পূর্ব সিলেটের ত্রিমূখী এই যাতায়াত সড়কে যানজটের ঝুঁকিতে পড়তে হয় যান চালক ও পথচারীদের। মানূষের ভিড় বাড়লে ব্যাঘাত ঘটে স্বাভাবিক চলাচলে। তাছাড়া চত্ত্বরের মূল অংশে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ময়লা-আবর্জনার স্তূপ ফেলে পরিবেশ দূষণ ঘটাচ্ছেন।

এদিকে, গেল বছরে সওজের জায়গায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হলেও প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় আবারও অবৈধ ব্যবসায়ীদের দখলে চলে গেছে চত্ত্বরটি। ফলে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ, চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে জনসাধারনের। ও নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

সুলতান আহমদ এক তরুণ জানান, নাহিদ চত্বর নামে স্থানটির পরিচিত পুরো সিলেটজুড়েই রয়েছে। অথচ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ চত্বর এভাবে অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকাটা দুঃখজনক। চত্বরের ভেতর নোংরা ও দুর্গন্ধময় হয়ে রয়েছে। এ ছাড়া স্থানটি দীর্ঘদিন ধরেই অস্থায়ী গাড়ি রাখার স্ট্যান্ড এবং বিভিন্ন সিম কোম্পানির মেলায় পরিণত হয়েছে। চত্বরের পরিবেশ সুন্দর রাখতে প্রশাসন ও রাজনৈতিক মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

বিয়ানীবাজার উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা সাইদুল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য শহীদ হুমায়ুর কবির চৌধুরী নাহিদের স্মৃতিকে অম্লান রাখতে এই চত্বরটি নির্মিত হয়েছিল। যথাযথ তদারকি ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে চত্বরটি বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। এটি প্রত্যক্ষ করাটা দুঃখজনক। চত্ত্বরটি সুরক্ষিত রাখতে প্রশাসন ও রাজনৈতিক মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

ইউপি নির্বাচন নিয়ে 'এবি টিভি'র বিশেষ আয়োজন ‘ভোটের হাওয়া’।। ৫ম পর্বে মাথিউরা ইউনিয়ন