সিলেট বিভাগে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের ২০২৩-২০২৪ মেয়াদের কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন আজ শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে। তবে এবার প্রথমবারের মতো কোনো নারী সভাপতি পদে প্রার্থী হয়ে গড়েছেন নতুন ইতিহাস। সে হিসেবে ‘অস্তিত্বজুড়ে একাত্তর’ মন্ত্রে দীক্ষিত সিলেটে সাংবাদিকতার এই স্মারক সংগঠনের ঐতিহাসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আজ।

মহানগরের পূর্ব জিন্দাবাজারের বারুতখানাস্থ সিলেট জেলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আজ দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোটগ্রহণ ও গণনা শেষে আজই ঘোষণা করা হবে চূড়ান্ত ফলাফল।

শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় নির্বাচনের প্রস্তুতি বিষয়ে বিশেষ সভা করেছেন বর্তমান কার্যনির্বাহী পরিষদের নেতৃবৃন্দ।

জেলা প্রেসক্লাব সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক আল আজাদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ছামির মাহমুদের পরিচালনায় সভায় ক্লাব নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে নেতৃবৃন্দ ভোটগ্রহণের সার্বিক প্রস্তুতি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ সদস্য রেজওয়ান আহমদ, সহসাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রাসেল, কোষাধ্যক্ষ মিসবাহ উদ্দীন আহমদ, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক শংকর দাস, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সুলতান সুমন, কার্যনির্বাহী পরিষদের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন প্রথম সদস্য ইউসুফ আলী, মাহমুদ হোসেন ও মিঠু দাস জয়।

অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে দু’টি প্যানেল ও স্বতন্ত্রসহ ২৯ জন প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে আছেন সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এ কে এম শমিউল আলম। এছাড়া আরও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে রয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট মহানগর ইউনিটের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ভবতোষ রায় বর্মন ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেট-এর সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী।

এর আগে ১৯ ডিসেম্বর রাতে দুটি প্যানেলের ২৬ জনসহ মোট ২৯ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। পরে মনোনয়নপত্র যাচাই করে নির্বাচন পরিচালনা পরিষদ। যাচাই শেষে সব প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। কেউ মনোনয়ন প্রত্যাহারও করেননি। তাই ভোটের শেষ লড়াইয়ে ২৯ প্রার্থীই থাকছেন।

নির্বাচনে প্যানেল দুটি হচ্ছে- হাসিনা-নবেল ও ফরিদী-দেবু প্যানেল। হাসিনা-নবেল প্যানেলে সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন হাসিনা বেগম চৌধুরী। বাকি প্রার্থীদের মধ্যে সহসভাপতি (প্রথম) পদে প্রার্থী হয়েছেন মনিরুজ্জামান মনির, সহসভাপতি (দ্বিতীয়) পদে সাঈদ চৌধুরী টিপু, সাধারণ সম্পাদক পদে শাহ দিদার আলম নবেল, সহসাধারণ সম্পাদক পদে রবি কিরণ সিংহ (মাইস্লাম রাজেশ), কোষাধ্যক্ষ পদে আনন্দ সরকার, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদে মিঠু দাস জয়, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে সুলতান সুমন, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে মো. এনামুল কবীর, পাঠাগার সম্পাদক পদে মো. আলী আকবর চৌধুরী (কোহিনূর), দপ্তর সম্পাদক পদে মো. আব্দুল আহাদ এবং নির্বাহী সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন মো. শাহীন আহমদ ও মো. আনোয়ার হোসেন।

অপরদিকে, ফরিদী-দেবু প্যানেলে সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন লিয়াকত শাহ ফরিদী। বাকি প্রার্থীদের মধ্যে সহসভাপতি (প্রথম) পদে প্রার্থী হয়েছেন মুকিত রহমানী, সাধারণ সম্পাদক পদে দেবাশীষ দেবু, সহসাধারণ সম্পাদক পদে মো. আব্দুল কাইয়ুম, কোষাধ্যক্ষ পদে সাদিকুর রহমান সাকী, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদে ইউসুফ আলী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে মো. একরাম হোসেন, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে রায়হান উদ্দিন, পাঠাগার সম্পাদক পদে মো. আবু বক্কর, দপ্তর সম্পাদক পদে মনিরুজ্জামান রনি এবং নির্বাহী সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন এ এইচ আরিফ, মাহমুদ হোসেন ও মো. ছয়ফুল আলম অপু।

প্যানেল ছাড়া সহসভাপতি (প্রথম) পদে এস সুটন সিংহ, সহসভাপতি (দ্বিতীয়) পদে সজল ঘোষ ও সদস্য পদে রনজিৎ কুমার সিংহ প্রার্থী হয়েছেন।

এদিকে, সিলেটে সাংবাদিকতার বর্ণাঢ্য ইতিহাসে এবার সূচিত হলো নতুন এক অধ্যায়। পেছনে বিস্তৃত শতবর্ষের সমৃদ্ধ ইতিহাসে কোনো সাংবাদিক সংগঠনের শীর্ষ পদে হননি কোনো নারী প্রার্থী। তবে এবার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি পদে একজন নারী প্রার্থী হয়ে খুলে দিয়েছেন যুগান্তকারী অধ্যায়ের সোনালী কপাট। তিনি আর কেউ নন, দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলের কিংবদন্তি সাংবাদিক অধ্যক্ষ মহিউদ্দিন শীরু’র সহধর্মিনী- হাসিনা বেগম চৌধুরী। তিনি প্রাচীন সংবাদপত্র দৈনিক যুগভেরী’র সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার।

শব্দ-বাক্যের শৈল্পিক কারিগর সিলেটের অমর সাংবাদিক মহিউদ্দিন শীরু’র স্ত্রী জেলা প্রেসক্লাব নির্বাচনে আজ সভাপতি পদে বিজয়ী হলে ইতিহাসের পাতায় নির্জর কালিতে লেখা হবে সম্পূর্ণ নতুন একটি অধ্যায়। হাসিনার হাত ধরে সিলেটে উন্মোচিত হবে নতুন দিগন্ত।

‌ঐতিহ্যের হাট-বাজার। পর্ব#৯। কুশিয়ারা-কাকেশ্বরী ও কুড়া নদীর প্রাণকেন্দ্রে গড়ে উঠেছিল ঢাকাদক্ষিণ বাজার