আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের বিয়ানীবাজার শাখায় ক্যাশ টাকা সঙ্কটে বিপাকে পড়েছেন নানা শ্রেণীপেশার গ্রাহকরা। ব্যক্তিগত বিভিন্ন প্রয়োজনে টাকা তুলতে এসে ফিরছেন হতাশ হয়ে। ব্যাংকে ক্যাশ টাকা না থাকায় চাহিদানুযায়ী সেবা দিতে পারছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। ফলে উদ্বিগ্নতা দেখা দিয়েছে সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে। মেজাজ হারিয়ে অনেকেই ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হচ্ছেন। তবে ব্যাংকের স্থানীয় শাখার কর্মকর্তা বলছেন, এ ব্যাপারে তাঁরা অসহায়।

গ্রাহকরা জানান, বিগত মাস খানেক সময় ধরে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের বিয়ানীবাজার শাখা থেকে ক্যাশ টাকা উত্তোলনে এ ধরনের সমস্যা হচ্ছে। সর্বোচ্চ দশ-ত্রিশ হাজার টাকার বেশি উত্তোলন করতে পারছেন না ক্রেতারা। ফলে, যেসব গ্রাহকরা ব্যবসায়িক বা অন্যান্য কাজের জন্য মোটা অঙ্কের টাকা তুলতে আসছেন তাদেরকে হতাশ হয়ে ফিরতে হচ্ছে। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডাও হচ্ছে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে গ্রাহকদের।

ব্যাংকটির বিয়ানীবাজার শাখায় সেভিংস একাউন্ট হোল্ডার আব্দুল করিম নামে একজন গ্রাহক জানান, পারিবারিক প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তার ছেলে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক বিয়ানীবাজার শাখার একাউন্টে টাকা পাঠিয়েছে। কিন্তু, ব্যাংক থেকে একসাথে তিন লক্ষ টাকা তুলতে পারেননি তিনি। শাখা কর্মকর্তারা তাকে বিশ-ত্রিশ হাজার টাকার বেশি দিতে পারছেন না। ফলে বিপাকে পড়েছেন তিনি। তিনি আরও জানান, শহরের অন্য আরেকটি ব্যাংকে তিনি চেক ক্লিয়ারিংয়ের মাধ্যমে টাকা তুলতে গিয়েও তিনি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন। অন্য ব্যাংকের একাউন্টে টাকা ডুকার পর আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক সেটি ফিরিয়ে নেয়।

একই ধরনের হয়রানির শিকার হয়েছেন সোহেল, জেবু, কামরুল, সাব্বির নামের একাধিক গ্রাহকের। তারা জানান, ঈদুল ফিতরের আগে তারা বার বার চেষ্টা করেও বড় অংকের টাকা ব্যাংকটি থেকে তুলতে পারেননি। ব্যাংক কর্মকর্তারা ঈদের পর টাকা পাওয়ার আশ্বাস দিয়ে তাদেরকেও সর্বোচ্চ বিশ-ত্রিশ হাজার টাকা তোলার জন্য বলেন। পরে বাধ্য হয়ে তারা অন্য উপায়ে টাকা যোগাড়ের ব্যবস্থা করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী গ্রাহক বলেন, আমার মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে। বিয়ের কেনাকাটার জন্য টাকা তুলতে ব্যাংকে এসেছিলাম। কিন্তু, ব্যাংক থেকে বলছে ২০ হাজারের বেশি টাকা তুলতে পারব না। কিন্তু, আমার প্রয়োজন কয়েক লাখ। এমন অবস্থায় আমার মেয়ের বিয়ে ভাঙার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে কথা বলতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা নেই জানিয়ে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক বিয়ানীবাজার শাখা ব্যবস্থাপক পাবেল আহমদ বলেন, ‘ বেশ কিছু দিন থেকে ব্যাংকের একটি ক্রাইসেস চলছে, হেড অফিস থেকে জানিয়েছিলো ঈদের পরে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, কিন্তু সেটি হয়নি। আমাদের এমডি স্যার মালয়েশিয়া থেকে আজই (সোমবার ২২ এপ্রিল) ফিরবেন। আগামীকাল (মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল) সকল শাখা ব্যবস্থাপকদের নিয়ে একটি সভার আহবান করেছেন, সেই সভায় পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ হবে। আশা করি সাময়িকভাবে সৃষ্টি হওয়া এ সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।