ইউরোপজুড়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছেন প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা। মহাদেশটিতে শুরু হওয়া ভাইরাসটির নতুন ঢেউয়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্রিটেন।

দেশটিতে প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষের দেহে শনাক্ত হচ্ছে করোনা। হাসপাতালেও লম্বা হচ্ছে ভর্তি হওয়া মানুষের সারি। নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে দুই লাখ সংক্রমণ ধরা পড়ছে ব্রিটেনে।

এদিকে, বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের মানুষ প্রবাসের মধ্যে ব্রিটেনেই বসবাস করছেন বেশি। তাই সে দেশে থাকা সিলেটিদের স্বজনরা নতুন করেছেন পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ইউরোপে কেড়ে নিয়েছে অনেকের স্বজনকে। তাই করোনার তৃতীয় ঢেউ উদ্বেগ তৈরি করেছে সিলেটবাসীর মধ্যে।

দেশটির ‘অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্স’(ওএনএস) জানিয়েছে, এই মুহূর্তে দেশে প্রতি ১৫ জনের মধ্যে একজন কোভিড-আক্রান্ত। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভয়াবহ হয়েছে রাজধানী লন্ডনের পরিস্থিতি। সেখানে প্রতি ১০ জন বাসিন্দার মধ্যে একজন করোনা পজিটিভ। আর ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হওয়া সেই লন্ডনে বসবাস করছেন সিলেটের অসংখ্য মানুষ।

ওএনএসের বক্তব্য অনুযায়ী, সব বয়সী মানুষের মাঝে সংক্রমণ বাড়ছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে কিশোর-কিশোরী এবং সদ্য প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছে এমন ছেলেমেয়েরা। তবে হাসপাতালে যেসব রোগী ভর্তি হচ্ছেন তাদের বেশিরভাগই বয়স্ক।

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও পার্লামেন্ট অধিবেশনে করোনার দ্রুত সংক্রমনের বিষয়টি জানিয়েছেন। বরিস জনসন বলেন, অতিমারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত এত দ্রুতগতিতে সংক্রমণ ঘটেনি কখনও। যদিও এর মাঝেই দেশের ভেতরে পর্যটনের সময়ে নিয়মিত করোনা পরীক্ষার যে নিয়ম রয়েছে, তা লঘু করেছেন বরিস। যেসব পর্যটকের টিকাকরণ সম্পূর্ণ রয়েছে, শুক্রবার থেকে তাঁদের আর ব্রিটেনের উড়ান ধরার আগে করোনা পরীক্ষা করাতে হবে না। তাছাড়া, পরীক্ষা করাতে হলেও আরটি-পিসিআর করাতে হবে না, ল্যাটেরাল ফ্লো টেস্ট করালেই হবে। শুধুমাত্র যাঁদের টিকা নেওয়া নেই, তাঁদের নির্দিষ্ট দিন অন্তর পরীক্ষা করাতে হবে।

যেখানে দিনে গড়ে দুই লাখ মানুষ নতুন করে সংক্রমিত হচ্ছেন তখন প্রধানমন্ত্রীর এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ অনেকেই। বরিস শুধু বলেছেন, ‘আমি নিশ্চিত, এই বিপুল ওমিক্রনের ঢেউয়ের মধ্যেও আমরা ঠিক অতিক্রম করতে পারব পথ। তার জন্য পরিমিত ও যথাযথ সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাজ্যে নতুন করে এক লাখ ৭৯ হাজার ৭৫৬ জনের করোনা ধরা পড়েছে। নতুন করে মৃত্যু হয়েছে ২৩১ জনের।

করোনা শুরুর পর থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৪০ লাখ ১৫ হাজার ৬৫ জনের করোনা ধরা পড়েছে। মোট মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৫১৫ জনের।