দ্বিতীয় দফা বন্যায় বিয়ানীবাজারে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে নানা আশ্বাসের পাশাপাশি বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ ও নগদ অর্থ বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু একাদিক ইউনিয়নে এসব ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে অনেকে ভুক্তভোগিরা চেয়ারম্যান-মেম্বারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের অভিযোগ- চেয়ারম্যান-মেম্বার ত্রাণ নিয়ে চালাকি করে তাদের কাছের মানুষদের দিচ্চেন এবং পরর্বতী নির্বাচনের মাঠ তৈরি করছে।

উপজেলা প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত সাড়ে ৪৪ টন চাল, নগদ ৫০ হাজার টাকা ও নিত্য প্রয়োজনীয় খাবার সামগ্রীর ৭৯৩ প্যাকেট বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি আশ্রায় কেন্দ্রে ১০২ পরিবারের মধ্যে উপজেলা প্রকল্প অফিসের তত্বাবধানে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। অবশিষ্ট ত্রাণ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বন্যা দুর্গতের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।

কয়েকটি ইউনিয়নের ভুক্তভোগিদের অভিযোগ চেয়ারম্যান, মেম্বারদের স্বজনপ্রীতি কারনে অনেক ক্ষতিগ্রস্তরা সরকারি ত্রাণ থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। লাউতা ইউনিয়নের বাহাদুরপুর দক্ষিণ গাঙ্গপারের বৃদ্ধা আপ্তাব আলী বলেন, লাউতা ইউনিয়নের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সোনাই নদীর তীরে বসবাসকারী গাঙ্গপার এলাকা মানুষ। কিন্তু সরকারিভাবে এ এলাকার ৩/৪জন ত্রাণ পেয়েছেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত আমি এ বয়সে কাজ কর্মে অক্ষম হলেও সরকারি কোন সহযোগিতা পাইনি।

কুড়ারবাজার ইউনিয়নের খশির গ্রামের রুবি বেগম জানান, নির্বাচনে বর্তমান মেম্বার কে ভোট না দেওয়ার অপরাধে এ বন্যায় মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হলেও কোন ত্রাণ পাইনি। অনেকের ক্ষতির পরিমান একে বারে কম হওয়া সত্তেও দুই তিনবার ত্রাণ পেয়েছেন। অসুস্থ স্বামী আর ছয় সন্তানদের নিয়ে অনেক কষ্টে আছি।

দুবাগ ইউনিয়নের মেওযা গুচ্ছ গ্রামের এলিছ উদ্দিন বলেন, আমরা নদীরপাড়ে সরকারি গুচ্ছগ্রামে থাকি। দুবাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বার কেউ আমরারে দেখাত আইছোন না, এ পর্যন্ত কোন ত্রাণ পাইছি না।

দুবাগ ইউনিয়নের সিলেটিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রায় কেন্দ্রে ১২ পরিবারের মধ্যে হাজেরা বেগমের পরিবার ও মৃত আবু তাহেরের স্ত্রী মানসিক প্রতিবন্ধি রিনা বেগম সরকারি প্যাকেটজাত ত্রাণ পাননি বলে অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মু: আসাদুজ্জামান জানান, সিলেটিপাড়া আশ্রায় কেন্দ্রের দু’ পরিবারের বাড়িতে চলে যাওয়ার প্যাকেটজাত ত্রাণ পাননি আমি নির্দেশ দিয়েছি তাদের বাড়িতে ত্রাণ পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য। তিনি বলেন, ত্রাণ বিতরণে কোন অনিয়ম অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।