সিলেট সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অফিসের কম্পিউটার অপারেটর ভুয়া বিল-ভাউচার বানিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ খবর অবশ্য বেশ পুরোনো। প্রাথমিকভাবে এমন খবর প্রচার হলে নথিপত্র গায়েব করে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু কীভাবে কত টাকা আত্মসাৎ করেছিলেন তিনি

জানা যায়, প্রায় পৌনে ৪ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রাথমিক তথ্য পেয়েছে দুদক। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও করা হয়েছে। গত ২৭ জানুয়ারি দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় সিলেটের সহকারী পরিচালক মো. ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলাটি সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে করা হয় বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।

জৈন্তাপুর উপজেলার দক্ষিণ বাগেরখাল গ্রামের মো. আব্দুল মুছবিরের পুত্র মো. নজরুল ইসলাম সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অফিসের কম্পিউটার অপারেটর হলেও হয়েছেন আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ। দুর্নীতির মাধ্যমে প্রথমে ভুয়া বিল-ভাউচার বানিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে আয়ন/ ব্যয়ন কর্মকর্তা দ্বারা স্বাক্ষর করিয়েছেন। পরে হিসাবরক্ষণ অফিসে জমা করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার স্বাক্ষর করা চেকে ইচ্ছামতো টাকার অংক বসিয়ে উত্তোলন করেছেন কোটি কোটি টাকা। কেবল তাই নয়, পরবর্তীতে ঘটনাটি জানাজানি হলে দুর্নীতির তথ্য ঢাকতে অফিসের নথিপত্র গায়েব করেছেন। এমনকি দেশত্যাগের চেষ্টাও করেছেন তিনি।

দুদকের একটি সূত্র জানায়, আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে যাওয়া এ কম্পিউটার অপারেটর ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৭টি চেকের মাধ্যমে ৮৭ লাখ ২ হাজার ৫শ ৯৬ টাকা, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১১টি চেকের মাধ্যমে ১ কোটি ১৫ লাখ ৮ হাজার ১শ ৩৯ টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৯টি চেকের মাধ্যমে ৯৮ লাখ ৫ হাজার ৯শ ১২ টাকা এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরের আংশিক সময়ে ৪২ লাখ ৯৩ হাজার ৭শ ৫৬ টাকা ও জিপিএফ অগ্রিম উত্তোলনের নামে ৯টি চেকের মাধ্যমে ৮৪ লাখ ৮০ হাজার ৮শ ১১ টাকা উত্তোলন করেছেন, যার মোট পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ কোটি ৮৪ লাখ ৯১ হাজার ২শ ১৪ টাকা।

এসব ঘটনা প্রথমে জানাজানি হলে নজরুল ইসলাম দেশত্যাগের চেষ্টা করেন। ওইসময় তাকে গ্রেপ্তার করে শাহপরান থানার পুলিশ। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪৭৭(ক)/২০১ ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় তিনি বর্তমানে জামিনে আছেন। আর নানা তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ৩ কোটি ৮৪ লাখ ৯১ হাজার ২শ ১৪ টাকা আত্মসাতের কারণে তার বিরুদ্ধে দুদকের পক্ষ থেকে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বিয়ানীবাজারের বেশিভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার