প্রকৃতিগতভাবেই নারী কন্ঠের অধিকারী ইমরান আহমদ (৩২)। আচার-আচরণেও রয়েছে মেয়েলি আদল। এই সুযোগটাকে ব্যবহার করে নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছেন অপরাধমূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে। আমেরিকা প্রবাসী তরুণী সেজে এক যুবকের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে সে। দীর্ঘ কয়েক মাস প্রেম করার পর আমেরিকার নিয়ে যাবার প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নেয় প্রায় পৌনে ৫ লাখ টাকা। এরপর হঠাৎ করে যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় ভুক্তভোগী যুবক প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারেন। এরপর থানায় অভিযোগ দায়ের করলে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় প্রতারক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা পুলিশ নিশ্চিত হয় কথিত প্রেমিকা নাজহা আক্তার ছাভা ওরফে ইমরান আহমদ আসলে একজন পুরুষ। তিনি সিলেট নগরীর শেখঘাট এলাকায় বসবাস করেন। সে ওই এলাকার মৃত ইকবাল আহমদের ছেলে। বুধবার বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানা পুলিশের সহযোগিতায় নগরীর শেখঘাট এলাকার জিতু মিয়া জমিদার বাড়ির বাসা থেকে তাকে রাত ৮টার দিকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

সাধারণ ডায়রি ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রতারক ইমরান আহমদ আমেরিকান তরুণী নাজহা আক্তার ছাভা নাম ধরে ভুক্তভোগী যুবক সুলতান আহমদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। ফেসবুক থেকে পরিচয়ের পর ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে উভয়ের মধ্যে গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। নারী কন্ঠের মাধুর্যতা দিয়ে যুবক সুলতান আহমদ প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিকাশ এর মাধ্যমে প্রতারণা শুরু করেন প্রতারক ইমরান আহমদ। ভিকটিম সুলতান আহমদকে বিয়ে করে আমেরিকা নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে হাতিয়ে নেন ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা। বিভিন্ন সময়ে বিকাশের মাধ্যমে নেয়া টাকা আমেরিকা নেয়ার প্রক্রিয়ায় ব্যয় হচ্ছে বলে সুলতান জানায়। গত ঈদুল আযহার প্রতারক ইমরানের সাথে আলাপে সন্দেহ হয় ভিকটিম সুলতান আহমদের। এরপর তিনি গত ২৩ জুলাই বিয়ানীবাজার থানায় সাধারণ ডায়রি করেন। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে বিয়ানীবাজার থানায় মামলা (১৩/২৯-০৭-২১) দায়ের করে পুলিশ বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতের প্রেরণ করে।

বিয়ানীবাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রুমেন বলেন, প্রতারক ইমরান আহমদ প্রকৃতিভাবে নারী কণ্ঠের। যার কারণে সে খুব সহজে যুবক সুলতানকে প্রেমের ফাদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নেয়। আমরা তার সাধারণ ডায়রি ও মোবাইল নম্বর ধরে প্রযুক্তি সহায়তা তদন্ত নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালিয়ে তাকে সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করেছি। তিনি জানান, প্রতারক ইমরামের স্ত্রী সন্তান রয়েছে। এ ঘটনায় ভিকটিম থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায় বলেন, গ্রেপ্তারকৃত প্রতারক ইমরান পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার বিষয়টি শিকার করেছে। তার আসামীর বিরুদ্ধে বিয়ানীবাজার থানায় মামলা (১৩/২৯-০৭-২১) দায়ের করা হয়েছে। দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতের প্রেরণ করা হয়।

বিয়ানীবাজারে লকডাউনের ৬ষ্ঠ দিনে জেলা পুলিশের অভিযান, ৫২ যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা