বিশেষ প্রতিনিধি। ২১ জানুয়ারি ২০১৭।

বিয়ানীবাজার উপজেলা ছাত্রলীগের পুর্নাঙ্গ কমিটি হয়নি গত ২৬ বছর থেকে। গত ৫ বছর থেকে ছাত্রলীগ অভিভাবকহীনভাবে রয়েছে। এতে রাজনৈতিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহৎ সংগঠনের উপজেলা শাখার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে মনে করেন ছাত্রীৈগের প্রবীন ও নবীন নেতাকর্মীরা।

দীর্ঘ ২৬ বছর উপজেলা ছাত্রলীগের ৪ আহবায়ক কমিটি দায়িত্ব পালন করেছে। সিলেট জেলা যুবলীগের সহ সভাপতি আব্দুল বারীকে আহবায়ক ও ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্ট ইউকে’র সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ও যুক্তরা্য প্রবাসী মাহমুদ হোসেন সেলিমকে যুগ্ম আহবায়ক করে ১৯৯১ সালে গঠিত হয় উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটি। পুনরায় আহবায়ক কমিটি হিসাবে গঠিত হয় ১৯৯৪ সালে। আব্দুল বারীকে আহবায়ক যুগ্ম আহবায়ক করা আব্দুল কুদ্দুছ টিটুকে। এ অবস্থায় পুর্নাঙ্গ কমিটি ছাড়া আহবায়ক কমিটি দিয়ে চলে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত। শিক্ষামন্ত্রীর এপিএস দেওয়ান মাকসুদুল ইসলা আউয়ালকে আহবায়ক ও জিএস ফারুকুল হক ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য এড আব্বাছ উদ্দিকে যুগ্ম আহবায়ক করে উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি দীর্ঘদিন পরিচালিত হয়েছে। কিন্তু কোন আহবায়ক কমিটি নির্ধারীত মেয়াদে পুর্নাঙ্গ কমিটির রূপ পায়নি। তিন সদস্যের এ আহবায়ক কমিটি ২০০৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে। ২০০৩ সালে উপর্যপুরি উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক ও সভাপতি সাধারণ সম্পাদক কমিটি গঠিত হয়। উপজেলা ছাত্রলীগের সর্বনাশা পথের বিস্তার ঘটে ২০০৩ সালে। প্রথমে আবুল কাশেম পল্লবকে সভাপতি ও জাকির হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা ছাত্রলীগ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করে। এর এক মাসের মাথায় জেলা ছাত্রলীগ পূর্বকার ঘোষিত কমিটি বাতিল করে জামাল হোসেনকে আহবায়ক ও আবুল কাশেম পল্লব ও জাকির হোসেনকে যুগ্ম আহবায়ক করে কমিটি করে। এ আহবায়ক কমিটি দীর্ঘদিন ছন্নছাড়া অবস্থায় চলতে থাকে। গ্রুপিং রাজনীতি সবচেয়ে বেশি বিকাশ ঘটে সর্বশেষ আহবায়ক কমিটির হাত ধরে। তিনটি গ্রুপ থেকে এ যাবত পর্যন্ত ছাত্রলীগ ছয়টি গ্রুপে ভাগ হয়ে পড়ে।

২০০৬ সালে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক জাকির হোসেন বিদেশ পাড়ি দেন। এর আগে পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন প্রক্রিয়া তিন আহবায়ক সদস্যদের গ্রুপং রাজনীতি জাতাকলে পড়ে ব্যস্তে যায়। ২০১২ সালে আহবায়ক জামাল হোসেন প্রতিপক্ষ পাবেল গ্রুপের নেতাকর্মীর হামলায় আহত হন। এক সালের ২ ফেব্রুয়ারি ছাতত্রলীগ পাবেল গ্রুপের নেতাকর্মীরা শাহপরান কমিউনিটি সেন্টারের একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে রয়েছে এ সংবাদে আহবায়ক জামাল হোসেন নেতাকর্মীদের নিয়ে হামলা চালান।

এ হামলা ঘটনায় জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশ হরে তৎকালিন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ফরহাদ হোসেন উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বাতিল করেন। এরপর থেকে উপজেলা ছাত্রলীগ অভিভাবকহীন রয়েছে।

সম্প্রতি উপজেলা ও বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করার কথা বিভিন্ন মাধ্যমকে জানিয়েছে জেলা ছাত্রলীগ। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার সামাদ বিয়ানীবাজার নিউজ ২৪কে বলেন, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সাথে উপজেলা ছাত্রলীগ বিষয়ে আলোচনা করে কর্মীসভার তারিখ নির্ধারণ করা হবে।

উপজেলা ছাত্রলীগের বিবদমান ছয়গ্রুপের এক ঝাঁক নেতাকর্মী রয়েছেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হওয়া দৌঁড়ে। তবে জেলা ছাত্রলীগ জানিয়েছে ২৯ বছরের মধ্যে ছাত্রত্ব রয়েছে এরকম মেধাবী ও দায়িত্বশীল ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দিয়ে উপজেলা ও কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হবে। বিবাহিত ও অছাত্র এবং জেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে রয়েছেন- এরকম নেতাকর্মীদের বিবেচনা করা না হতে পারে। তব এবার আহবায়ক কমিটি নয়- জেলা ছাত্রলীগ পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করা পক্ষে রয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত কমিটি হবে কি হবে না এরকম এক প্রশ্নের জবাবে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার সামাদ বলেন, এবার কমিট হবে। কমিটি না হওয়ার কোন কারণ দেখি না। তবে কমিটি নিয়ে যারাই অশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।