সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে স্থগিত দুই কেন্দ্রে কোন ধরনের উত্তাপ ছাড়াই চলছে ভোটগ্রহন শান্তিপূর্ণভাবেই চলছে ভোট, নেই সেদিনের সেই পরিবেশ। গত ৩০ জুলাইয়ের স্মৃতি নগরবাসীর মনে এখনো দাগ কেটে আছে। সেদিনের সেই ভয়, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা কিছুতেই ভুলতে পারছেন নগরীর সাধারণ মানুষ। জালভোট , ব্যালট বাক্স ছিনতাই, কেন্দ্র দখল ও সংঘর্ষ-মারামারি বিতর্কের জন্ম দিয়েছিল সেদিন। পরে নির্বাচনে অনিয়মের কারণে এ দুই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রগুলো হলো- নগরের ২৪ নং ওয়ার্ডের ১১৬ নং গাজী বুরহান উদ্দিন গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯ (পুরুষ ও মহিলা) এবং ২৭ নং ওয়ার্ডের ১৩৪ হবিনন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (পুরুষ ও নারী) কেন্দ্র।

এদিকে, বৃষ্টি বাগড়ায় শুরু হয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। অনিয়মের অভিযোগে স্থগিত হওয়া সিসিকের দু’টি কেন্দ্রে ও সংরক্ষিত ৭ নং ওয়ার্ডের ১৪টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ শনিবার (১১ আগস্ট) সকাল ৮টায় শুরু হয়। ভোট শুরুর আগে সকাল পৌনে ৮টার দিকে সিলেটে শুরু হয় বৃষ্টি। প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে ছাতা হাতে ভোট কেন্দ্রগুলোতে উপস্থিত হন ভোটারদের অনেকেই। বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা চলবে এই ভোট গ্রহণ।

কেন্দ্র দু’টির মধ্যে গাজী বুরহান উদ্দিন গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯ (পুরুষ ও মহিলা) কেন্দ্রে ২ হাজার ১২১ ভোট এবং হবিনন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২ হাজার ৫৬৬ ভোট রয়েছে।

এছাড়া সংরক্ষিত ৭ নং ওয়ার্ডে (১৯, ২০ ও ২১) সমান সংখ্যক ভোট পাওয়া নাজনীন আক্তার কনা (জিপগাড়ি) প্রতীকে চার হাজার ১৫৫ ভোট পান। সমান সংখ্যক ভোট পান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নার্গিস সুলতানা (চশমা)। এ দুই প্রার্থীর মধ্যে ১৪টি কেন্দ্রে পুনরায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

ভোট গ্রহণ চলা কেন্দ্রগুলোতে ৩৪ হাজার ১২৩ জন ভোটার ৯৭টি কক্ষে ভোট দেবেন। এর মধ্যে ১৯ নং ওয়ার্ডে চারটি কেন্দ্রে ৩২টি কক্ষে ১১ হাজার ৬২৬ জন ভোট দেবেন। ২০ নং ওয়ার্ডে পাঁচটি কেন্দ্রে ৩১ কক্ষে ১০ হাজার ৫৬৪ জনের ভোটগ্রহণ করা হবে এবং ২১ নং ওয়ার্ডে পাঁচটি কেন্দ্রে ৩৪টি কক্ষে ১১ হাজার ৯৩৩ জন ভোটার ভোট দেবেন।

সংরক্ষিত ৭নং ওয়ার্ডের ১৪টি কেন্দ্র হলো- ১৯ নং ওয়ার্ডের হাজি শাহ মীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পূর্ব পাশের ভবন (পুরুষ) ও উত্তর এবং পশ্চিম পাশের ভবন (নারী), বখতিয়ার বিবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (পুরুষ), দর্জিপাড়া সার্ক ইন্টারন্যাশনাল কলেজ (নারী), ২০ নং ওয়ার্ডের এমসি কলেজ টিলাগড় (পুরুষ ও নারী), দেবপাড়া নবীন চন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উত্তর পাশের ভবন (পুরুষ কেন্দ্র) ও দক্ষিণ পাশের (নারী), সৈয়দ হাতিম আলী উচ্চ বিদ্যালয় (নারী ও পুরুষ), ২১ নং ওয়ার্ডের সৈয়দ হাতিম আলী উচ্চ বিদ্যালয় (পুরুষ ও নারী), কালাশীল চান্দুশাহ জামেয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা (পুরুষ ও নারী), সোনারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (পুরুষ ও নারী), শিবগঞ্জ স্কলার্সহোম প্রিপারেটরি স্কুল (পুরুষ ও নারী)।

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২৭টি ওয়ার্ডে ১৩৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২টির ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী আরিফুল হক চৌধুরী ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৯০ হাজার ৪ শত ৯৬ ভোট। আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৮৫ হাজার ৮ শত ৭০ ভোট।

১৩২ কেন্দ্রের ফলাফলে ৪ হাজার ৬ শত ২৬ ভোটে আরিফুল হক চৌধুরী এগিয়ে থাকলেও এ দুই কেন্দ্রের মোট ভোট ৪ হাজার ৭ শত ৮৭। সে হিসেবে স্থগিত কেন্দ্রের ভোটের চেয়ে ১৬১ ভোট পিছিয়ে রয়েছেন আরিফুল হক চৌধুরী। যে কারণে গত ১ আগস্ট কেন্দ্র দু’টিতে ১১ আগস্ট ফের ভোটগ্রহণের তারিখ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

স্থগিত কেন্দ্রসহ মোট ১৬টি কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে এক যোগে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে বলে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলীমুজ্জামান জানিয়েছেন।