হেলমেট না থাকায় প্রকাশ্যে কান ধরে যুবকদের উঠবস করালেন এক পুলিশ কনস্টেবল। বিষয়টি নিয়ে সিলেটে তোলপাড় চলছে। ওই পুলিশ সদস্য সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মাহবুব আলমের দেহরক্ষী। মঙ্গলবার (১০ মার্চ) দুপুরে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বর্ণি এলাকায় এ দৃশ্য দেখা গেছে। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছেন ওই পুলিশ সদস্য।
জানা গেছে, দুপুরে কোম্পানীগঞ্জে হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ‘প্রযুক্তিনির্ভর কর্মসংস্থান সুযোগ তৈরির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন ছিল। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব আলম। অনুষ্ঠানস্থলের কাছাকাছি পৌঁছামাত্র ২০ থেকে ২২ বছরের দুই যুবক মোটরসাইকেলে করে অনুষ্ঠান স্থলের দিকে যাচ্ছিলেন। তাদের মাথায় হেলমেট পরিহিত না থাকায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে বহনকারী পুলিশের গাড়িটি তাদের গতিরোধ করায়। গাড়ি থেকে নেমে আসেন পুলিশ কর্মকর্তার দেহরক্ষী হিসেবে থাকা কনস্টেবল। তিনি যুবকদের মোটরসাইকেলের সামনে দাঁড়িয়ে তাদের কান ধরে উঠবস করাতে দেখা যায়। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি নজরে আসে ওই সড়ক দিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে যাওয়া গণমাধ্যমকর্মীদের। তারা ভিডিওচিত্র ধারণ করতেই বাধা দিতে এগিয়ে আসেন ওই পুলিশ কনস্টেবল। মন্ত্রীর অ্যাসাইনম্যান্ট কাভার করতে যাওয়া গণমাধ্যমকর্মীদের গাড়ি জানতে পেরে বলে উঠেন তাদের মাথায় হেলমেট নেই।
সিলেট জেলা পুলিশের মিডিয়া উইং থেকে জানানো হয়, ওই অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব আলম গিয়েছিলেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাহবুব আলম বলেন, ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার খবর জানতে পেরেছি। ওই দুই যুবকের হেলমেট ছিল না।
সিলেট জেলা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শামসুল ইসলাম বলেন, হেলমেট কিংবা কাগজ না থাকার কারণে বড় জোর মামলা দেওয়া যায়। কিন্তু প্রকাশ্যে কান ধরে উঠবস করানো আইন সঙ্গত নয়। এ বিষয়ে চাইলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন।
এদিকে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সিলেটের সমন্বয়ক ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যুবকদের হেলমেট না থাকার কারণে মামলা দেওয়া যেত। কিন্তু পুলিশ তাদের প্রকাশ্যে কান ধরে উঠবস করানো কোনো নীতি নৈতিকতার মধ্যে পড়ে না। এ ধরনের বেআইনি কার্যক্রম দেখে ওপর মহল শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত দেখাবেন।
তথ্যসূত্র- বাংলানিউজ২৪।
‘এবি টিভি’র সর্বশেষ প্রতিবেদন-