সিলেটে করোনাভাইরাস আক্রান্ত কিনা তা জানতে অনেকেই নমুনা দিয়েও ফলাফল পেতে বিলম্ব হওয়ায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন নমুনা প্রদানকারীরা। সিলেট বিভাগে ৫ হাজার ৯৬২ জন নমুনা প্রদানকারী করোনা পরীক্ষার প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছেন। উপসর্গ নিয়ে চলাফেরা করছেন তারা। এদের মাঝে যদি করোনা পজেটিভ হয় তা হলে করোনা সংক্রমণ আরও ব্যাপক হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

সিলেটে প্রতিদিন করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দীর্ঘ হচ্ছে। এ পর্যন্ত সিলেট বিভাগে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় দুই হাজারের কাছাকাছি। এর মধ্যে শুধু সিলেট জেলাতেই বৃহস্পতিবার (১১ জুন) সকাল পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ১৬৩ জন।

জানা যায়, ওসমানী হাসপাতালে কিছুদিন পরপর নমুনা জমে যাচ্ছে। তখন তা পাঠানো হচ্ছে ঢাকায়। আর এতে করে রিপোর্ট আসতে লাগছে দীর্ঘ সময়। সময়মতো রিপোর্ট না পাওয়ায় সিলেটে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের আতঙ্ক।

জানা যায়, প্রথম দিকে ঢাকা থেকে সিলেটের সকল নমুনা পরীক্ষা করা হতো। পরবর্তীতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা শুরু হলে এখানেই বিভাগের সব নমুনা পরীক্ষা করা হতো। তবে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওসমানী থেকে রিপোর্ট আসতে লাগতে শুরু করে দীর্ঘ সময়। তাই এখন শুধু সিলেট জেলার করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে।

অপরদিকে সুনামগঞ্জ জেলার নমুনা পরীক্ষা হয় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিসিআর ল্যাবে এবং হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের পরীক্ষা হয় ঢাকার ল্যাবে।

চার জেলার সিভিল সার্জন অফিস থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, বুধবার (১০ জুন) পর্যন্ত সিলেট জেলায় নমুনা জমা পড়েছে ৮ হাজার ৩০০টি। এর মধ্যে পরীক্ষা হয়েছে ৪ হাজার ৪৭৫টি। এখনও সিলেট জেলায় ৩৮২৫টি নমুনার রিপোর্ট আসেনি। এছাড়া সুনামগঞ্জে নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৫ হাজার ১৮৬টি। আর পরীক্ষা হয়েছে ৪ হাজার ৪৭৪টি। এখনও রিপোর্ট পাওয়া যায়নি ৭১২টি নমুনার।

এদিকে, হবিগঞ্জে নমুনা জমা হয়েছে ৫ হজার ১৭৫টি। এখন পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৪ হাজার ৩৫০টি। রিপোর্ট আসেনি ৮২৫টি নমুনার। আর মৌলভীবাজারে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে প্রায় ৩ হাজার। এখনও রিপোর্ট আসেনি প্রায় ৬০০টি নমুনার।

সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মণ্ডল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এই মাসের ২ থেকে ১১ তারিখে যেসব নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে তা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ঢাকা থেকে বৃহস্পতিবার ২৯০টি নমুনার রিপোর্ট এসেছে।’

অনেকে অভিযোগ করে বলছেন, নমুনা জমা দেওয়ার পর প্রায় ৭ থেকে আটদিন এমনকি দশদিন পর্যন্ত লেগে যাচ্ছে পরীক্ষার ফল জানতে। এতে করে অনেকেই উপসর্গ নিয়ে চলাফেরা করছেন। যাচ্ছেন অন্যদের সংস্পর্শে। এই কারণে সিলেটে সামনের দিনগুলোতে করোনা সংক্রমণ আরও ব্যাপক হতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আনিসুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, নমুনা জট তৈরি হওয়ায় কিছু নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তবে সিলেটে আরও কিছু পিসিআর মেশিন আসবে।

তিনি আরও জানান, হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের জন্য একটি এবং সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পিসিআর মেশিন স্থাপনের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এছাড়া জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির মাধ্যমে সিলেট বক্ষব্যাধি হাসপাতালে একটি এবং সুনামগঞ্জে একটি পিসিআর মেশিন স্থাপন করা হবে।

সংবাদ সৌজন্য- সিলেট সান।

বিয়ানীবাজারে আরো ৪জনের করোনা শনাক্ত