কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন অবমাননার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ঘটে যাওয়া সংঘাতময় পরিস্থিতির যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেজন্য সিলেট বিভাগের তিন জেলা পুলিশকে সতর্ক থাকার নির্দেশা দেওয়া হয়েছে। সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলা পুলিশকে দেওয়া হয়েছে এমন নির্দেশনা। আজ থেকে ১০ দিন এই বাড়তি সতর্কাবস্থা বজায় থাকবে।

পুলিশ সদরদপ্তর থেকে দেওয়া নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ঈদে মিল্লাদুন্নবী (সা.), সনাতন ধর্মাবলম্বীদের লক্ষ্মী পূজা ও বৌদ্ধদের প্রবারণা পূর্ণিমাকে সামনে রেখে এই বাড়তি সতর্কতার নির্দেশনা দেওয়া হলো। এছাড়া যেসব এলাকায় সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, সেই এলাকায় ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেই নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

শুধু সিলেটের তিনটি জেলাই নয়, দেশের আরও ২৩টি জেলার পুলিশকে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ সদরদপ্তর।

জানা গেছে, সতর্কতার অংশ হিসেবে মাঠপর্যায়ে গোয়েন্দা তৎপরতাও বৃদ্ধি করা হয়েছে।

আগামী ১০ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে স্বাভাবিক অবস্থা থাকলে সতর্কতা পরিহার করা হবে। আর পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নিলে সতর্কতার মেয়াদ বাড়তে পারে।

প্রসঙ্গত, গেল বুধবার (১৩ অক্টোবর) কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরীফ পাওয়ার ঘটনায় দেশজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে হামলার চেষ্টা হয়। বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে জনতার সংঘর্ষ বাঁধে। কয়েকজন মারাও যান।

সিলেটেও ছিল উত্তপ্ত পরিস্থিতি। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটের ওই তিন জেলায় পুলিশ বাদী হয়ে ৮টি মামলা করেছে। এসব মামলায় অন্তত ১৬০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এদিকে, কুমিল্লার ঘটনার পর একটি চক্র গুজবও ছড়িয়ে দিতে থাকে। জমিজমার বিরোধে রাজধানীর পল্লবীতে দুর্বৃত্তদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হওয়া মো. সাহিনুদ্দিনকে হত্যার সময় ধারণ করা ভিডিও ‘নোয়াখালীর হিন্দু মহাজোট কর্মী যতন শাহ হত্যাকাণ্ডের’ ভিডিও বলে গুজব ছড়ানো হয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের বেশ কয়েকজন নাগরিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও টুইটার ব্যবহার করে ধর্মীয় উস্কানি ও গুজব ছড়াতেই এই ভিডিও বানায়। পরে তা বাংলাদেশের বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।