সিলেটে ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট বা ই-পাসপোর্ট পরিষেবা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়। প্রথম গ্রাহক হিসেবে ই-পাসপোটের্র জন্য আবেদন করেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান। এর আগে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম ই-পাসপোর্ট পরিষেবার উদ্বোধন করেন।

এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান বলেন, ‘সিলেটে ই-পাসপোর্টের জন্য প্রথম গ্রাহক হিসেবে সোমবার আমি আবেদন করেছি। এর আগে সিলেটের জেলা প্রশাসক এই পরিষেবার উদ্বোধন করেন।’ ই-পাসপোর্ট চালু হলে প্রবাসী অধ্যূষিত সিলেটবাসীর ভোগান্তি অনেক কমে আসবে বলে মনে করেন তিনি।

ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্প সূত্র থেকে জানা যায়, ই-পাসপোর্টে মোবাইল ফোনের সিমের মতো ছোট ও পাতলা ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপ যুক্ত থাকবে। এই চিপ পাসপোর্টের একটি বিশেষ পাতার ভেতরে থাকবে। এই পাতা সাধারণ পাতার চেয়ে মোটা হবে। চিপে সংরক্ষিত বায়োমেট্রিক তথ্য বিশ্লেষণ করে পাসপোর্ট বহনকারীর পরিচয় শনাক্ত করা যাবে। এতে করে একজনের নাম পরিচয় দিয়ে অন্য নামে পাসপোর্ট কেউ করতে পারবে না। এই পাসপোর্ট নকল হওয়ার আশঙ্কাও থাকবে না। সাধারণ পাসপোর্টের তুলনায় ই-পাসপোর্টে নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যও থাকছে বেশি। এতে ৩৮ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য থাকবে, যার অনেক বৈশিষ্ট্য থাকবে লুকানো অবস্থায়। ই-পাসপোর্ট করার সময় মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (এমআরপি) ডেটাবেইসে পাওয়া তথ্যগুলো ই-পাসপোর্টে স্থানান্তর করা হবে।

সাধারণ পাসপোর্টের মতো ই-পাসপোর্টের আবেদনও অনলাইনে করা যাবে। চাইলে পিডিএফ ফরম ডাইনলোড করে হাতেও পূরণ করা যাবে। ফরম পূরণের সময় ছবি সত্যায়ন করা লাগবে না। তবে বয়স্কদের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে জন্মনিবন্ধন সনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আবেদনপত্র গ্রহণের সময় আবেদনকারীর ছবি, ১০ আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশের ছবি নেওয়া হবে। সেই সব তথ্য চিপে যুক্ত হবে। ইমিগ্রেশন পুলিশ বিশেষ যন্ত্রের সামনে পাসপোর্টের পাতাটি ধরতেই সব তথ্য বেরিয়ে আসবে। ই-পাসপোর্টের জন্য অনলাইনে িি.িফরঢ়.মড়া.নফ ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করা যাবে।

ই-পাসপোর্ট হবে দুই ধরনের। একটি ৪৮ পাতার, অন্যটি ৬৪ পাতার। সাধারণ, জরুরি ও অতি জরুরির জন্য ফি তিন ধরনের। দুই দিনের মধ্যে পাসপোর্ট দেওয়ার নিয়ম চালু হয়েছে। এ জন্য ফিও বেশি গুণতে হবে। ৪৮ পৃষ্টার ৫ বছর মেয়াদি ২১ দিনের নিয়মিত সরবরাহ ৪ হাজার ২৫ টাকা, ১০ দিনের দ্রæত সরবরাহ ৬ হাজার ৩২৫ টাকা, ২ দিনে সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি ৮ হাজার ৬২৫ টাকা। ৪৮ পৃষ্ঠার ১০ বছর মেয়াদি ২১ দিন ডেলিভারি ৫ হাজার ৭৫০ টাকা, ১০ দিনের ডেলিভারি ৮ হাজার ৫০ টাকা ও ২ দিনের ডেলিভারি ১০ হাজার ৩৫০ টাকা। ৬৪ পৃষ্ঠা ৫ বছর মেয়াদি ২১ দিনের ডেলিভারি ৬ হাজার ৩২৫, ১০ দিনের ডেলিভারি ৮ হাজার ৬২৫, ২ দিনের ডেলিভারি ১২ হাজার ৭৫ টাকা, ৬৪ পৃষ্ঠা ১০ বছর মেয়াদি ২১ দিনের ডেলিভারি ৮ হাজার ৫০, ১০ দিনের ডেলিভারি ১০ হাজার ৩৫০, ২ দিনের ডেলিভারি ১৩ হাজার ৮০০ টাকা।

উল্লেখ্য, গত ২২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর শেরবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

সময় বাঁচাবে আর উৎপাদন ব্যয় কমাবে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ