করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকানোর লক্ষ্যে শুক্রবার থেকে আবার ১৪ দিনের লকডাউনে যাচ্ছে দেশ। এই সময়ে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে মানুষের অবাধ চলাফেরা; বন্ধ থাকবে সরকারি, বেসরকারি অফিসসহ সব শিল্পকরখানা। তবে জরুরি পরিষেবা বিবেচনায় খোলা থাকবে ব্যাংক।

সাপ্তাহিক ছুটি শুক্র ও শনিবার ছাড়া সপ্তাহে পাঁচ দিনই সকাল ১০টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত লেনদেন করা যাবে ব্যাংকগুলোতে। ব্যাংক খোলা থাকায় চলবে পুঁজিবাজারের লেনদেনও।

ঈদের আগে ১ থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত চলে দুই সপ্তাহের লকডাউন। বিধিনিষেধের প্রথম দুই রোববার লেনদেন হয়নি ব্যাংকে।

ঈদ উপলক্ষে ৮ দিনের জন্য বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে তখনই জানিয়ে দেয়া হয় ঈদের তৃতীয় দিন সকাল থেকে আবার শুরু হবে দুই সপ্তাহের লকডাউন, যা শেষ হবে ৫ আগস্ট।

২৩ জুলাই শুক্র আর পরদিন শনিবার থাকায় এমনিতেই ব্যাংক বন্ধ। ফলে প্রশ্ন ছিল রোববার কী হবে?

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘২৫ জুলাই (রোববার) ব্যাংক খোলা থাকবে। এর আগে লকডাউনের কারণে সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে রোববার ছুটির বিষয় বিবেচনা করা হয়েছিল। তবে সামনের লকডাউনে রোববার বন্ধ থাকার বিষয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ জন্য আগের মতো রোববারও ব্যাংকিং কার্যক্রম চলবে।’

ঈদের পর লকডাউনে ব্যাংকে লেনদেন কীভাবে পরিচালিত হবে, সে বিষয়ে ১৩ জুলাই প্রজ্ঞাপন জারি করে পরিষ্কার করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়, কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় ২৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত (সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়া) বিধিনিষেধ চলাকালে সকাল ১০টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত ব্যাংক লেনদেন চলবে। লেনদেন পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম চলবে বিকেল ৩টা পর্যন্ত।

লকডাউনে ব্যাংকের যেসব সেবা চালু

বিধিনিষেধ চলাকালে গ্রাহকদের হিসাবে নগদ বা চেকের মাধ্যমে অর্থ জমা ও উত্তোলন, ডিমান্ড ড্রাফট বা পে-অর্ডার ইস্যু ও জমা গ্রহণ, বৈদেশিক রেমিট্যান্সের অর্থ পরিশোধ, সরকারের বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমের আওতায় প্রদত্ত ভাতা বা অনুদান বিতরণ চালু থাকবে। এ ছাড়া ব্যাংকের খোলা রাখা বিভিন্ন শাখা ও একই শাখার বিভিন্ন হিসাবের মধ্যে অর্থ স্থানান্তর, ট্রেজারি চালান গ্রহণ, অনলাইন সুবিধাসংবলিত ব্যাংকের সব গ্রাহকের এবং উক্ত সুবিধাবহির্ভূত ব্যাংকের খোলা রাখা শাখার গ্রাহকদের বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক চালু রাখা বিভিন্ন পেমেন্ট সিস্টেমস বা ক্লিয়ারিং ব্যবস্থার আওতাধীন অন্যান্য লেনদেন সুবিধা প্রদান এবং জরুরি বৈদেশিক লেনদেনসংক্রান্ত কার্যাবলি চালু থাকবে।

এটিএম বুথ ও ইন্টারনেট ব্যাংকিং

শাটডাউনে কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন ও ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে। এ সময়ে এটিএম বুথগুলোতে পর্যাপ্ত নোট সরবরাহ রাখার নির্দেশও দেয়া হয়েছে।

সমুদ্র, স্থল বা বিমানবন্দর এলাকায় (পোর্ট ও কাস্টমস এলাকা) অবস্থিত ব্যাংকের শাখা বা উপ-শাখা বা বুথসমূহ সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনসহ বন্দর বা কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনাক্রমে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে পরিপালন নিশ্চিতপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এবারের লকডাউন ‘সবচেয়ে কঠোর’

মানুষের অবাধ চলাফেরায় এবারের বিধিনিষেধ ‘সবচেয়ে কঠোর’ হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি। জানান, শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে ৫ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত চলমান থাকবে এই কঠোর অবস্থা। এ বিষয়ে ১৩ তারিখ মন্ত্রিপরিষদের প্রজ্ঞাপনেই জানিয়ে দেয়া হয়েছিল।

শিথিল অবস্থার মেয়াদ পিছিয়ে ২৭ জুলাই থেকে আবার শাটডাউন দেয়ার যে গুঞ্জন ছড়িয়েছে, তার কোনো ভিত্তি নেই বলে উড়িয়ে দিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী।

ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘যেহেতু অফিস-আদালত এবং গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, রপ্তানিমুখী- সবকিছু বন্ধ থাকবে, তাই এটা এ পর্যন্ত যতগুলো লকডাউন হয়েছে তার মধ্যে সর্বাত্মক কঠোর হবে।

‘যেহেতু মানুষের বাইরে আসার প্রয়োজন হবে না, মানুষের অফিসে যেতে হবে না, গার্মেন্টস কারখানায় যেতে হবে না, ফলে এবারেরটা গতবারের চেয়ে বেশি কঠোর হবে। এটি বাস্তবায়ন করার জন্য মাঠে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি ও সেনাসদস্যরা থাকবেন।’

বিয়ানীবাজারের আঙ্গুরা গ্রামের প্রবাসীদের উদ্যোগে গ্রামে ও মাদ্রাসায় ৭টি কোরবানির গরুর মাংস বিতরণ