প্রবাসী অধ্যুষিত বিয়ানীবাজার উপজেলায় লকডাউনের মধ্যেও চলছে এনজিও কিংবা ক্ষুদ্র ঋণদান সংস্থাগুলোর কিস্তি আদায়। টাকা আদায়ের জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে গ্রাহকদের নিকট ধরনা দিচ্ছেন এনজিও-সংস্থার কর্মীরা। এমনকি ঋণ আদায়ের জন্য গ্রাহকদের সঙ্গে জোর-জবরদস্তি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর থেকে মৃত্যু ও আক্রান্তের হার বাড়তে থাকায় দেশে চলছে সর্বাত্মক লকডাউন। ফলে সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে অনেক মানুষের। এমন পরিস্থিতিতে এনজিওর ঋণের কিস্তি দিতে হিমশিম খাচ্ছেন নিম্ন আয়ের ঋণগ্রহীতারা। এ ছাড়াও অনেকে এনজিও থেকে সাপ্তাহিক কিস্তিতে ঋণ নিয়ে ইজিবাইক, অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন চালিয়ে, টি-স্টল ও পান-সিগারেটের দোকান খুলে তা থেকে আয় করে জীবিকা নির্বাহ করেন ও ঋণের কিস্তি শোধ করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধিকাংশ এনজিও বিবাহিত নারীদের সমিতির মাধ্যমে ঋণ দিয়ে থাকে। এমন সময়ে এ সকল ভুক্তভোগী খেটেখাওয়া ঋণগ্রহীতা যখন তাদের সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। এর মধ্যে বিভিন্ন এনজিওকর্মীরা বাড়ি বাড়ি কিস্তি আদায়ের জন্য ধরনা দিচ্ছেন, চাপ সৃষ্টি করে কিস্তি আদায় করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচলের সরকারি নির্দেশনা থাকলেও এনজিওকর্মীরা ঋণগ্রহীতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিস্তির টাকা আদায় করছেন। কোনো কোনো এনজিওকর্মী এক বাড়িতে টেবিল-চেয়ার নিয়ে বসে পাড়ার সব নারী ঋণগ্রহীতাদের নিকট থেকে কিস্তি আদায় করছেন। এ সময় নারী গ্রহীতাদের মাঝে মাস্ক ব্যবহার বা সামাজিক দূরত্ব মানার কোনো বালাই থাকছে না।

আরও জানা গেছে, বিয়ানীবাজার পৌরশহরেও বিভিন্ন ক্ষুদ্র ঋণদান সমিতি নামে এনজিও পরিচালিত হচ্ছে। যাদের কাছ থেকে সাপ্তাহিক ও মাসিক কিস্তি পরিশোধ সাপেক্ষে ঋণ নেন অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। কিন্তু চলমান লকডাউনের কারণে এসব ব্যবসায়ীরা ব্যবসায় ক্ষতির সম্মুখীন হলেও এনজিও বা ঋণদান সংস্থাগুলো থেমে নেই। সাপ্তাহিক ও মাসিক কিস্তি পরিশোধের জন্য ঋণ গ্রহীতাকে চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। একেই করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব তার উপর এখন রমজান মাস।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঋণ গ্রহীতা বলেন, লকডাউনে বাড়িতে বসে সময় কাটছে, কোনো আয়-রোজগার নেই। ধারদেনা করেই সংসার চালাচ্ছি, কিস্তি কিভাবে শোধ করবো ভেবে পাচ্ছি না। স্থানীয় একটি ঋণদান সংস্থা থেকে কিস্তিতে তাকা নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, লকডাউনের সময় কিস্তি বন্ধ না করলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে।

বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশিক নূর বলেন, এনজিওর কিস্তি আদায় প্রসঙ্গে আমাদের কাছে সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। যদি কোন এনজিও কিংবা ঋণদান সংস্থা কর্তৃক সর্বাত্মক লকডাউন চলাকালেও কিস্তি আদায় করচ্ছে- এমন অভিযোগ পেলে আমরা প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

অবশেষে স্থায়ী শহীদ মিনার পেলো বিয়ানীবাজারের একটি স্কুল