দু’দফা রিমান্ডে নিলেও রায়হান আহমদকে নির্যাতন চালিয়ে হত্যার ঘটনার দায় স্বীকার করেননি বহিস্কৃত পুলিশ কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস। দুদফায় ৮ দিন রিমান্ড শেষে বুধবার (২৮ অক্টোবর) তাকে আদালতে তোলা হলেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেননি তিনি।

রিমান্ড শেষে বুধবার দুপুরে কড়া নিরাপত্তায় সিলেটের মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জিয়াদুর রহমানের আদালতে তোলা হয় টিটু চন্দ্র দাসকে। এ সময় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না দেয়ায় টিটুকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। এছাড়াও একই মামলায় গ্রেপ্তার বন্দরবাজার ফাঁড়ির কনস্টেবল হারুন অর রশীদকে বৃহস্পতিবার পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে আদালতে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র পরিদর্শক মহিদুল ইসলাম।

গত ২০ অক্টোবর সিলেট পুলিশ লাইন্স থেকে টিটুকে গ্রেপ্তারের পর তাকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। প্রথম দফা রিমান্ড শেষে গত ২৫ অক্টোবর আবারও টিটুর ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। তবে দুই দফা রিমান্ড শেষেও রায়হানকতে নির্যাতনের ঘটনায় আদালতে জবানবন্দি দিতে সম্মতি হননি টিটু।

রায়হান আহমদ মৃত্যর ঘটনায় শেখ সাইদুর রহমান নামে আরেক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ১০ অক্টোবর রাতে সাইদুরের অভিযোগের প্রেক্ষিতেই রায়হানকে ধরে এনেছিলো পুলিশ। ২৫ অক্টোবর সকালে সাইদুর রহমান পিবিআই অফিসে নিয়ে আসা হয়। এরপর বিকেলে তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তারর দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

টিটু ও হারুন বন্দরবাজার ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন। রায়হান আহমদ মৃত্যুর ঘটনায় টিটু-হারুনসহ আরও ৪ পুলিশ সদস্যকে আগেই সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছিলো।

উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোবর ভোরে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনের শিকার হন রায়হান আহমদ (৩৪) নামের এক যুবক। পরে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে তিনি মারা যান। রায়হান সিলেট নগরীর আখালিয়ার নেহারিপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি নগরীর রিকাবিবাজার স্টেডিয়াম মার্কেটে এক চিকিৎসকের চেম্বারে কাজ করতেন।

এই ঘটনায় ১২ অক্টোবর রাতে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হেফাজতে মৃত্যু আইনে সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন রায়হানের স্ত্রী।

এরপর পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলে রায়হানকে ফাঁড়িতে এনে নির্যাতনের প্রাথমিক প্রমাণ পায় কমিটি। এই তদন্ত কমিটির সুপারিশে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূইয়া, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটুচন্দ্র দাসকে সাময়িক বরখাস্ত এবং এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়।

স্ত্রীর দায়ের করা মামলাটির তদন্ত করছে পিবিআই। মামলার প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর পলাতক রয়েছেন বলে দাবি পুলিশের।