সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত রায়হান হত্যার মূল অভিযুক্ত বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেন পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) সৌমেন মৈত্র ও মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক বাতেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বুধবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) বি এম আরাফ উল্যাহ তাহের।

ওসি (তদন্ত) সৌমেন মৈত্র আকবরের সিনিয়র কর্মকর্তা ও বাতেন ছিলেন রায়হান হত্যা মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা। পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে তাদের দু’জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত উপ-কমিশনার বি এম আরাফ উল্যাহ তাহের। এ বরখাস্ত গত ১৮ নভেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে বলে জানা গেছে।

বরখাস্তকৃত দুইজনের মধ্যে সৌমেনকে রংপুরে ও বাতেনকে সিলেট পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে চাঞ্চল্যকর এই মামলায় এসএমপির মোট সাত পুলিশ সদস্য সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজন প্রত্যাহার হলেন। এছাড়া এ পর্যন্ত এসআই আকবর হোসেন ভুইয়াসহ গ্রেফতার করা হয়েছে চার পুলিশ সদস্যকে।

প্রসঙ্গত, গত ১১ অক্টোবর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে গুরুতর আহত হন রায়হান। তাকে ওইদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির এএসআই আশেকে এলাহীসহ পুলিশ সদস্যরা। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান রায়হান।

ঘটনার পর পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, নগরের কাস্টঘরে গণপিটুনিতে রায়হান নিহত হন। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনে প্রাণ হারান রায়হান।

এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে সিলেট মহানগর পুলিশের তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পেয়ে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করেন। ঘটনার প্রায় ১ মাস পর ভারত সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মূল অভিযুক্ত বরখাস্ত হওয়া এসআই আকবরকে। মামলাটি পুলিশ সদরদপ্তরের নির্দেশে পিবিআইয়ের তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।