শীতকালে রাত ১০টা মানেই গভীর রাত। গ্রামের লোকজন লাঠিসোটা, বাঁশি, চার্জলাইট নিয়ে এক এক করে আসতে শুরু করে। দলে দলে বিভক্ত হয়ে গ্রামের প্রবেশপথসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে শুরু হয় পাহারা দেওয়ার কাজ। গ্রামের ভিতরে অপরিচিত কাউকে দেখলেই তাকে ঘিরে ফেলছে। শুরু হয় নানা প্রশ্ন। অপরিচিত হলে লিখে রাখছেন নাম ও ঠিকানা। সম্প্রতি বিয়ানীবাজার পৌরসভাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

জানা গেছে, শীত এলেই সিলেটের প্রবাসী অধ্যুসিত বিয়ানীবাজার উপজেলায় বাড়ে ডাকাতি। বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ডাকাতরা এসে অবস্থান নিয়ে প্রবাসী অধ্যুসিত এই উপজেলাজুড়ে ডাকাতি করে বেড়ায়। এবার শীত মৌসুম শুরু হতেই বেড়েছে ডাকাত আতঙ্ক। শুধুই ডাকাতিই নয়, রয়েছে দুর্ধ্বর্ষ চুরির ঘটনা। সম্প্রতি বিয়ানীবাজারের লাউতা ইউনিয়নের কালাইউরা গ্রামের দুটি বাড়ি থেকে রাতের আঁধারে বসতঘরের ভেতর থেকে তিনটি মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে। মোল্লাপুর ইউনিয়নের এলাকার বিভিন্ন স্থানে অপরিচিত মানুষের আনাগোনা বৃদ্ধি পেয়েছে।

এছাড়াও গত ৫ জানুয়ারি রাতে পূর্বে থানা পুলিশের অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্রসহ তিন ডাকাত গ্রেফতারের পর থেকে পুরো উপজেলাজুড়ে ডাকাতি আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বাধ্য হয়ে জানমাল রক্ষার্থে লোকজন চুরি-ডাকাতি রোধে প্রতি রাতে দল বেঁধে পাহারা দেওয়া শুরু করেন।

সরেজমিনে বিয়ানীবাজার পৌরসভার নয়াগ্রাম, মোল্লাপুর ইউনিয়নের মোল্লাপুর, লাউতা ইউনিয়নের কালাইউরা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, এক প্রকার আতঙ্ক কাজ করছে মানুষের মধ্যে। পাহারা দেওয়ার কাজে ছাত্র, যুবক, ব্যবসায়ী, শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার লোক কাজ করছে। ১০-১২ জনের দলে বিভক্ত হয়ে রাত ১১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত চলে পাহারা।

এদিকে, গ্রামবাসীর এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকার মুরব্বী ও সচেতন মহলের বাসিন্দারা।

বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায় বলেন, চুরি-ডাকাতির রোধে থানা পুলিশ তৎপর রয়েছে। উপজেলার সবকটি ইউনিয়নে রাত্রিকালীন টহল দ্বিগুণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে আমরা তিনজন ডাকাতকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছি। তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অন্য ডাকাত চক্রকে ধরতে আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি।

বিয়ানীবাজারে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ আলী স্মরণে শোকসভা ও দোয়া মাহফিল