খুব সম্ভবত দু’সপ্তাহ আগে আমার মুঠোফোনে পরিচিত একটা কণ্ঠ থেকে প্রশ্ন আসলো -তারিক সাহেব, কেমন আছেন?

-ভাল আছি। আমার উত্তরে যথেস্ট কনফিডেন্স ছিল না।

তাই প্রশ্নকর্তার পরিচিতি নিয়ে আমি যে কনফিউজড সেটা বুঝতে পেরে সরাসরি বললেন-আমি স্বপন। ফোন করলাম। একটা অনুরোধ আছে। ৮ ফেব্রুয়ারি কিছু ছেলে ভাষা আন্দোলন বিষয়ক একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে চায় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে। ওদের অনুমতি দিতে হবে ।

– ঠিক আছে স্বপন ভাই। প্রিন্সিপাল স্যারের সাথে কথা বলে আমি অনুমতির ব্যবস্থা করব।

সেই অনুযায়ী স্যারের সাথে বলে ছেলেদের অনুমতি দেয়া হলো। যথারীতি অনুষ্ঠান হলো। কিন্তু গতরাতে সুমনের স্ট্যাটাস থেকে স্বপন ভাইয়ের মৃত্যুর খবরটা পেলাম। ভুল দেখলাম নাতো? সুমন ভুল করল নাতো? ফোন করলাম সুমনের কাছে। সে তখন হাসপাতালে। বুঝলাম স্বপন ভাই চলে গেছেন না ফেরার দেশে।

কলেজে কিছু কাজ শেষে প্রিন্সপাল স্যার এবং আরো দুজন সহকর্মীসহ গেলাম কসবায় -স্বপন ভাইয়ের বাড়িতে। স্বপন ভাইয়ের ছেলে আমাদের ছাত্র শুভ ‘আব্বা গেচুন গিয়া’ বলে স্যারের বুকে মাথা রেখে কেঁদে উঠলো তখন আমার চোখের পাতাও ভিজে উঠছে। ছেলেহারা এক বাবার বুকে বাবাহারা আরেক ছেলে। পৃথিবীর সব ব্যথা যেন জড়ো হলো সে মুহু্র্তে। কোন প্রবোধ দিতে পারলাম না শুভকে – ওর সাথে কান্নায় যোগ দেয়া ছাড়া!

বড় তাড়াতাড়িই চলে গেলেন স্বপন ভাই। ওপারে ভাল থাকুন – এই প্রার্থনাই করি আল্লাহর কাছে…।

লেখক- উপাধ্যক্ষ, বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ। (লেখকের ফেসবুক টাইমলাইন থেকে নেয়া)