বড়লেখায় দুই পক্ষ গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে নারীসহ কমপেক্ষ ৩০ জন আহত হয়েছেন। মসজিদের সভাপতি পদ নিয়ে পূর্ব বিরোধের জের ধরে আজ রোববার দুপুরে উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের ভোলারকান্দি গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সংঘর্ষের ঘটনায় আহতদের মধ্যে ১৬ জনকে বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত থানায় কোনো পক্ষই অভিযোগ দেয়নি।

উভয়পক্ষে আহতরা হচ্ছেন- ভোলারকান্দি গ্রামের কাশিম আলী (৫০), ইসলাম উদ্দিন (৪০), নিজাম উদ্দিন (২২), সজ্জাদ আলী (৪৫), আপ্তাব আলী (৪৫), হাজী মক্তার আলী (৬০), নজই মিয়া (৪০), হাফিজ উদ্দিন (২২), আবুল হোসেন (২০), একরাম আলী (৫৫), আজিজুর রহমান (৩০), আপ্তাব রহমান (২০), ইকবাল হাসান (১৮), আফিয়া বেগম (৩২), কমরুন নেছা (৫৫), রুমি বেগম (৩০) প্রমুখ।

এদের মধ্যে নজই মিয়া, হাফিজ উদ্দিন, মক্তার আলী ও আপ্তাব আলীর অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাদের সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের ভোলারকান্দি গ্রামের মসজিদ কমিটির সভাপতি পদ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের দুইপক্ষের মাঝে বিরোধ চলছিল। এরই মাঝে রবিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে গ্রামের জাবেদ আলীর ছেলে মুদি দোকানি কামালের সাথে আরজদ আলীর ছেলে শামীম আহমদের পাওনা টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বিষয়টি গ্রামের মুরব্বিদের নিয়ে তাৎক্ষণিক মক্তার আলী সমাধান করে দেন। এর ঘন্টাখানেক পর গ্রামের লোকজন দেশিয় অস্ত্র নিয়ে দুইভাগে (উভয় পক্ষের) বিভক্ত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের নারীসহ অন্তত ৩০জন আহত হয়েছেন।

এ দিকে সংর্ঘষে দোকান ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ তুলেছেন একটি পক্ষ। এছাড়া সংঘর্ষে গুরুতর আহত মসজিদ কমিটির সভাপতি মক্তার আলীর ছেলে ছায়াদ আহমদ অভিযোগ করে বলেন, ‘স্থানীয় মেম্বার মাসুক উদ্দিনের ইন্ধনে এ সংঘর্ষ হয়েছে। মেম্বার গ্রামে বিরোধ সৃষ্টি করছেন। তার উপস্থিতিতে ও নির্দেশে আমার বাবার উপর হামলা হয়েছে।’

অভিযোগ অস্বীকার করে মাসুক উদ্দিন বলেন, ‘আমি লোকজনের চিৎকার শুনে বাড়ি থেকে বের হয়েছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছি। না পেরে আওয়ামী লীগের সভাপতি লাল ভাইকে ও পুলিশকে খবর দেই। তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এটা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ।’

স্থানীয় সুজানগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নছিব আলী বলেন, ‘গ্রামের লোকজন দুইভাগে বিভক্ত হয়ে মারামারি করেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। আহতদের উদ্ধার করে বড়লেখা হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। পাওনা টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটি ও মসজিদের সভাপতি পদ নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।’

এ ব্যাপারে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অমিতাভ দাস তালুকদার বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে খবর পেয়ে পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পুলিশ যাবার আগেই মারামারি হয়েছে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাঁরা হাসপাতাল ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ঘটনায় কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ দেননি।’