বড়লেখা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান হোসেনেকে ছুরিকাঘাতের জের ধরে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলকালে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ অ্যাসল্ট মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে বড়লেখা থানার এসআই নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ ও ১৬০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে এই মামলা করেছেন।

এই ঘটনায় পুলিশ বড়লেখা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম ফরহাদ ও তাঁর চাচাতো ভাই রেহান আহমদকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সুন্দরের ভাতিজা।

বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেল চারটায় বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। সংঘর্ষে পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় পুলিশ অ্যাসল্ট মামলা হয়েছে। দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বড়লেখা পৌরসভা নির্বাচনে নৌকার পক্ষে প্রচারণা শেষে মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে বড়লেখা পৌর শহরের পাখিয়ালা চৌমুহনীতে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান হোসেনের ওপর হামলা চালানো হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সুন্দরের ভাতিজা ছাত্রলীগ নেতা শিমুল আহমদের নেতৃত্বে এই হামলা হয়। এতে ইমরান হোসেনের হাত কেটে যায়। এদিকে ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান হোসেনের ওপর হামলার খবরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিভিন্ন এলাকা থেকে পাখিয়ালা এলাকায় ছাত্রলীগের কর্মীরা জড়ো হন। এরপর উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। দফায় দফায় রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। সংঘর্ষে বড়লেখা থানার এসআই নজরুল ইসলাম ও সুব্রত কুমার দাস, এএসআই আব্দুল হালিম, কনস্টেবল মেহেদি হাসান ও তোহেল আহমদসহ উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হন।

আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেন। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্থানীয় প্রশাসন মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুর ২টা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ এলাকা থেকে বড়লেখা সরকারি কলেজ এলাকা পর্যন্ত ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারি করে।

বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শামীম আল ইমরান বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা ছিল। তাই ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে উদ্ভূত পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ ও সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুর ২টা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স হতে বড়লেখা সরকারি কলেজ এলাকা জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল।’