বড়লেখায় চাঞ্চল্যকর কলেজছাত্র প্রান্ত চন্দ্র দাস (১৮) হত্যা মামলার প্রধান আসামী সুমন চন্দ্র দাসকে মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ এজাহার নামীয় আরো ৪ আসামীসহ আদালতে সোপর্দ করলে বিজ্ঞ বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হরিদাস কুমার আসামীদেরকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন। নিহতের বড়ভাই শুভ দাস সোমবার রাতে ৮ জনের নাম উল্লেখ ও আরো ৬-৭ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে থানায় হত্যা মামলা করেন। এরআগে পোষ্টমোর্টেম রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর রোববার রাতে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রধান আসামী সুমন চন্দ্র দাস, তার স্ত্রী নিভা রানী দাস, চাচাতো ভাই নিরেশ দাস, নিকেশ দাস ও ভাতিজা চন্দন দাসকে আটক করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সুমন দাস (৩৪) একাই প্রান্তকে গলাটিপে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রাখার কথা স্বীকার করে। গতকাল সন্ধ্যায় আদালতেও সে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে।

মামলার বিবরণে নিহত প্রান্ত দাসের বড়ভাই শুভ দাস জানায়, তার ছোটভাই বিগত ৬ বছর ধরে উপজেলার বর্নি ইউপির মিহারী গ্রামে পিসাতো ভাই সুমন দাসের বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করতো। বর্তমানে সে বর্নি এম. মুন্তাজিম আলী কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। গত ২৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় সুমনের ছোটভাই সুজন দাস বিদেশ (ফ্রান্স) থেকে মোবাইল ফোনে মায়ের সাথে কথা বলে। সে তাড়াতাড়ি প্রান্তকে তাদের বাড়ি থেকে নিয়ে যেতে বলে। সে নাকি ববিতা রানী দাসের (১৮) (মামলার এজাহার নামীয় ৭নং আসামী) সাথে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করেছে। এতে তাদের পারিবারিক সম্পর্ক নষ্ট হচ্ছে। এসমস্থ কারণে যেকোন অঘটন ঘটিতে পারে। এরপর আসামীরা সঙ্গবদ্ধভাবে তার ছোটভাইকে হত্যার পর দুইদিন লাশ গুম করে রাখে। সে দুইদিন ধরে নিখোঁজ এবং পরে আত্মহত্যা করেছে বলে আমাদের নিকট খবর পাঠানো হয়।

মামলার বাদী শুভ দাস জানান, লাশ উদ্ধারের সময় পুলিশ হত্যাকারীদের দুইজনকে আটক করলেও প্রভাবশালীদের চাপে ছেড়ে দেয়। তবে ময়না তদন্ত রিপোর্টে হত্যার আলামত পাওয়ার পরই পুলিশ তৎপর হয়ে তাদেরকে আটক করেছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইয়াছিনুল হক জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুলিশ আদালতের মাধ্যমে আসামীদেরকে কারাগারে প্রেরণ করেছে। প্রধান আসামী সুমন দাস আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে। প্রান্ত দাস হত্যায় আর কারো সম্পৃক্ততা রয়েছে কি না জানতে আদালতে তিনি আসামীদের রিমান্ড চাইবেন।