বড়লেখার দাসেরবাজারে সালিশের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে শনিবার (১০ আগস্ট) দুপুরে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি ৮০ রাউণ্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সূত্র জানায়, কথা কাটাকাটির জের ধরে উপজেলার সুড়িকান্দি ও লঘাটি গ্রামবাসীর মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী, এলাকাবাসী, থানা পুলিশসহ একাধিক সূত্র জানায়, কিছুদিন আগে উত্তর লঘাটি গ্রামের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মান্না নামের এক ছেলেকে মারধর করে সুড়িকান্দি নিজজঙ্গল গ্রামের আব্দুল করিম গংরা। এ নিয়ে পরবর্তীতে বিচার বসে। উভয়পক্ষের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে আমানত নেয়া হয়। শনিবার সকাল ১১টায় পূর্ব নির্ধারিত তারিখে এ নিয়ে স্থানীয় মধ্যবাজারে সালিশ বসে। নির্যাতিত যুবকের বক্তব্য দেয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বাঁধে। এ নিয়ে লঘাটি ও বৃহত্তর সুড়িকান্দি গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে দীর্ঘ সময়ব্যাপী ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে বাজারের বেশ কয়েকটি দোকানপাটে ব্যাপক হামলা চালানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শর্টগানের অন্তত ৮০ রাউ- ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সংঘর্ষে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুব্রত কুমার দাস, কনস্টেবল তুহেল, সুমন আহমদ, আব্দুর রাজ্জাক, আলতাফ মিয়া, জালাল মিয়া, হাসান মিয়া, জমির আলী, জুনেদ মিয়া, আব্দুস শুকুর, বিলাল আহমদ, ফাহিম আহমদ, বিমান দাসসহ উভয়পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন। আহতদের মধ্যে পুলিশসহ ৮জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। অন্যান্যরা স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। সংঘর্ষের খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

অপরদিকে সংঘর্ষের সময় বাজারের ছোটো-বড়ো অর্ধশত দোকান ভাংচুর ও ব্যাপক লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এছাড়া মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ অন্তত ১০টি গাড়ি ভাংচুর করা হয়। বাসাবাড়িতেও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এ ঘটনায় দাসেরবাজারের বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। ঈদের বাজারের আগে বাজারের এ চরম ক্ষতি মেনে নিতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বড়লেখা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইয়াছিনুল হক জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আনুমানিক ৮০ রাউ- শর্টগানের ফাঁকা গুলি বর্ষণ করা হয়। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।