বড়লেখা প্রতিনিধি। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
বড়লেখা উপজেলার কেরামতনগর চা বাগানসহ বিভিন্ন জনের নিকট থেকে অভিনব পন্থায় প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে লাপাত্তা হওয়া হিসাবরক্ষক মারুফ আহমদকে (৪৫) অবশেষে ঢাকায় গ্রেপ্তার হয়েছে। এ সংক্রান্তে বাগান কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলায় সিআইডি পুলিশের নির্দেশে ডিএমপি’র শাহবাগ থানার এএসআই হেলাল উদ্দীনের নেতৃত্বে সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শাহবাগ পুলিশ গ্রেপ্তারকৃত মারুফকে মৌলভীবাজার সিআইডি পুলিশের নিকট সোপর্দ করেছে। গত ১২ জানুয়ারি বিকেলে কর্মস্থল এলাকা থেকে মারুফ আহমদ উধাও হয়।
মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মারুফ আহমদ দীর্ঘদিন ধরে বড়লেখার কেরামতনগর ও কুমারসাইল চা বাগানের একাউন্টেন্ট (হিসাবরক্ষক) হিসেবে কর্মরত ছিল। চা বাগানের দু’টি ব্যাংকের পৃথক ৫ একাউন্টের চেকবই, ক্যাশবই, হিসাব-নিকাশ ছাড়াও ভূসম্পত্তির যাবতীয় কাগজপত্র তার কাছে সংরক্ষিত ছিল। গত ১২ জানুয়ারি বাগান কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে মারুফ আহমদ হঠাৎ উধাও হয়ে যায়। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।
বাগান কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে মারুফের লাপাত্তার ঘটনায় বাগানের জেনারেল ম্যানেজার মিজানুর রহমান গত ১৬ জানুয়ারি বড়লেখা থানায় জিডি করেন। পরদিন ৫টি ব্যাংক হিসাবের স্টেটমেন্ট সংগ্রহের পর ক্যাশ বইয়ের সাথে মেলাতে গিয়ে ১ কোটি ১ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনা ধরা পড়ে। এছাড়া বাগানের আরও ২০/২৫ লাখ টাকা গড়মিল থাকার বিষয় নিশ্চিত হয়ে ১৮ জানুয়ারি জেনারেল ম্যানেজার মিজানুর রহমান মারুফ আহমদকে প্রধান আসামী ও আরও দুইজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে সিআইডি মৌলভীবাজারে তদন্তাধীন আছে।
এদিকে চা বাগানে দীর্ঘদিন চাকুরীর সুবাদে মারুফ স্থানীয় বিভিন্ন পেশাজীবীর সাথে সুসম্পর্ক ও বিশ্বস্ততা গড়ে তুলে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও বাগানের সমস্যার কথা বলে বিভিন্ন জনের নিকট থেকে সে আরও প্রায় কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করে। মারুফ নিখোঁজ হওয়ায় তার প্রতারণার ঘটনাগুলো ফাঁস হতে থাকে।
ডিএমপি’র শাহবাগ থানার এএসআই হেলাল উদ্দিন মারুফ আহমদকে গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে সিলেটটুডেকে জানান, সোমবার রাতে তিনি তাকে গ্রেফতার করেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে মারুফকে মৌলভীবাজার সিআইডি পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।