বিয়ানীবাজারের প্রতিষ্ঠিত কাপড় ব্যবসায়ী সহিব উদ্দিন সৈবনকে হত্যার পূর্বে কৌশলে চেতনানাশক বড়ি খাইয়েছিল ঘাতক জাকির ও হাসান। কৌশলে খাবারের সাথে তারা চেতনানাশক বড়ি খাইয়ে তাকে অচেতন করে। সৈবন হত্যা মামলার অগ্রগতি এবং দ্বিতীয় আসামীর আদালতে স্বীকারোক্তি নিয়ে ব্রিফ করে বিয়ানীবাজার থানার ওসি শাহজালাল মুন্সী।

তিনি বলেন, চার ঘাতকদের দুইজনকে পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। এর মধ্যে শুক্রবার রাতে পুলিশ শামীম বিশ্বাস নামের একজনকে নেত্রকোনা থেকে গ্রেফতার করে। শনিবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্ধি দিয়েছে শামীম বিশ্বাস।

শাহজালাল মুন্সী বলেন, শামীম বিশ্বাসকে পাঠানটুলা থেকে গাড়িতে তুলা হয়। সেও আমেরিকা যাওয়ার জন্য জাকিরকে টাকা দিয়েছে বলে আমাদের জানিয়েছে। জাকির- শামীমকে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বলে তোমার আমেরিকা যাওয়ার বিষয়ে আমার শ্বশুড়ে সাথে আলাপ করতে হবে। তুমি এখনই পাঠানটুলাও আসো। তারপর শামীম আসার পর তাকে গাড়িতে তুলে জাকির। গাড়ির ভেতর জাকির, হাসান, ঘুমন্ত অবস্থায় ব্যবসায়ী সৈবন এবং চালকের আসনে জাকিরের চাচাতো ভাই দুলাল ছিল। গাড়িটি নস্যিনটিলা ইকোপার্কে ওইদিকে তারা নিয়ে যায় এবং সময় ব্যয় করতে থাকে। শামীম জানিয়েছে রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাসান শ্বাসরুদ্ধ করে সৈবনকে হত্যা চেষ্টা করে। এ সময় তিনি নড়ে উঠবে হাসান গলা ছুরি চালিয়ে দেয়। গলা কাটার পর গড়গড় শব্দ হলে জাকির চালক দুলালের কাছে থেকে ছোট ছুরি এসে গলার ভেতরে দুইবার কোপ দেয়।

রাত দশটার দিকে লাশ রাস্তার পাশে পেলে শেওলা সেতুর উপরে এসে সৈবনের জুতা, মোবাইল, ছুরি ও গামছা নদীতে ফেলে দেয়। তারা বিয়ানীবাজার পৌরশহরের কলেজ রোড হয়ে চন্দরপুর সেতু পাড়ি দিয়ে সিলেট চলে যায়।

এক প্রশ্নের জবাবে ওসি শাহজালাল মুন্সী বলেন, জাকিরের সাথে সৈবনের ১ কোটি ২৯ লাখ টাকার ব্যাংকিং লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে আমেরিকা যাওয়ার জন্য এতো টাকা দিলেও ব্যবসায়ী সৈবনের কোন পাসপোর্ট ছিল না।

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে ওসি জানান, হাসানকে ঢাকার বস সাজিয়ে ব্যবসায়ী সৈবনের সাথে কথা বলাতো জাকির। জাকিরের প্রতারণার সাথে হাসান যুক্ত ছিল। গাড়ি চালাতে থাকা জাকিরের চাচাতো ভাই দুলালকে ১লাখ টাকার কন্টাকে এ হত্যাকাণ্ডে নিয়ে আসে জাকির।

তিনি অপর দুই আসামীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করতে সক্ষম হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।