তিনি যত বড় তারকা, তত বেশি বিতর্কও তাকে ঘিরে। ক্যারিয়ার শুরুর পর থেকেই নানা সময় নানা বিতর্ক ঘিরে ছিল সাকিব আল হাসানকে। সর্বশেষ বিতর্ক, যে কোনো ধরনের ক্রিকেট থেকে এক বছরের নিষেধাজ্ঞা। যদিও নিষেধাজ্ঞাটা ছিল ২ বছরের জন্য। কিন্তু আইসিসি শুরুতেই এক বছর কমিয়ে দেয়, তদন্ত কাজে সহযোগিতার জন্য। সাকিব আল হাসানের সেই এক বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ হতে যাচ্ছে বুধবার, ২৮ অক্টোবর। বৃহস্পতিবার তথা ২৯ অক্টোবর থেকে ক্রিকেটে অংশ নিতে পারবেন সাবেক বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার।

জুয়াড়িদের ফিক্সিং প্রস্তাবে তিনি রাজি হননি। কিন্তু প্রস্তাবের বিষয়টি আইসিসি কিংবা সংশ্লিষ্ট কাউকে জানানওনি সাকিব আল হাসান। যদিও তিনি জানিয়েছিলেন, বিষয়টাকে খুব বেশি গুরুত্ব দেননি, তাই জানাননি। শেষ পর্যন্ত সেই অপরাধেই আইসিসির পক্ষ থেকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হলো সাকিব আল হাসানকে।

আইসিসির তদন্ত শুরু হওয়ার পর অবশ্য সাকিব আল হাসান সব ধরনের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছিলেন। কোনো রাখ-ঢাক করেননি। এ কারণেই আইসিসি ২ বছরের শাস্তি দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে এক বছর কমিয়ে দেয়।

২০১৯ সালে বাংলাদেশের ক্রিকেটে অক্টোবর মাসটা ছিল বেশ ঘটনাবহুল। বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার বিষয়কে সামনে এনে বিসিবির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে জাতীয় ক্রিকেটাররা। তারা ধর্মঘটের ডাক দেয়। যার নেতৃত্ব দেন স্বয়ং সাকিব আল হাসান। শেষ পর্যন্ত বিসিবি সাকিবদের সঙ্গে বৈঠক করে দাবি-দাওয়া মেনে নেয়ার ঘোষণা দেয়। এরপর ক্রিকেটাররা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয়।

এরপরই হঠাৎ বাজ পড়ার মত খবর, নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছেন সাকিব। শেষ পর্যন্ত সব ঘটনা পরিস্কার হয়ে গেলো সবার সামনে এবং আইসিসি থেকে নিষেধঘাজ্ঞার ঘোষণা আসলো। সাকিব আল হাসান নিষেধাজ্ঞার শাস্তি মেনে নেন তখন। এরপর গত এক বছর ক্রিকেট থেকে সম্পূর্ণই দুরে ছিলেন তিনি। অধিকাংশ সময়টা তিনি কাটিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের পাশে থেকে। এরই মধ্যে দ্বিতীয় কন্যা সন্তানের বাবা হয়েছেন সাকিব।

মাঝে সেপ্টেম্বরের শুরুতে ঢাকা ফিরেছিলেন ব্যক্তিগত অনুশীলনের জন্য। বিকেএসপিতে লোকচক্ষুর অন্তরালে অনুশীলন চালিয়েছেন বেশ কিছুদিন। লক্ষ্য ছিল, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের সফরেই ক্রিকেটে ফেরা। বিসিবির ইচ্ছা ছিল, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টেই সাকিবকে দলে ফেরানোর। যেটা শুরু হওয়ার কথা ছিল, ২ কিংবা ৩ নভেম্বর। কিন্তু নানা কারণে বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কা সফর বাতিল হয়ে যাওয়ায়, নিষেধাজ্ঞামুক্ত হয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিবের ফিরে আসাটা হয়ে পড়ে সুদুরপরাহত। অনুশীলন বাদ দিয়ে সাকিব ফিরে যান যুক্তরাষ্ট্রে।

তবে, বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছেন, নভেম্বরের ১৫ তারিখ থেকে শুরু হতে যাওয়া ৫ দলের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট দিয়েই ফিরবেন সাকিব। বিসিবি সভাপতির ভাষ্য অনুযায়ী, ১০ নভেম্বরের মধ্যে দেশে ফিরে আসবেন সাকিব আল হাসান। ততদিনে তিনি থাকবেন নিষেধাজ্ঞামুক্ত একজন ক্রিকেটার।