আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগেই লাতু-জলঢুপ সড়কের সোনাই নদীর ওপর নির্মিত আতুয়া-নয়াগ্রাম সেতুর সংযোগ সড়কে দেখা দিয়েছে ধস। অন্যদিকে নদীশাসনের কাজ না করায় ভাঙনের কবলে পড়েছে সোনাই নদীর পার্শ্ববর্তী বড়লেখা অংশের জমি।

এ ছাড়া সংযোগ সড়কে পর্যাপ্ত মাটি ভরাট, পানি নিস্কাশন ও পাকাকরণের কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় আতুয়া-নয়াগ্রাম ব্রিজ। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলে যান চলাচলের বিঘ্ন ঘটে।

বড়লেখা ও বিয়ানীবাজার উপজেলার সীমান্তবর্তী চার ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষের সরাসরি সিলেট যাতায়াতের দুর্ভোগ লাঘবে লাতু-জলঢুপ সড়কে সোনাই নদীর ওপর আতুয়া-নয়াগ্রাম ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ও সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মুড়িয়ার অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, সুতারকান্দি স্থলবন্দরের সঙ্গে মৌলভীবাজার জেলা শহরের এবং বড়লেখার সঙ্গে বিভাগীয় শহর সিলেটের দূরত্ব কমিয়ে আনতে সোনাই নদী ওপর নির্মিত হয় আতুয়া-নয়াগ্রাম সেতু।

সেতুটির সংযোগ সড়কের বিয়ানীবাজার উপজেলার নয়াগ্রাম অংশে পর্যাপ্ত মাটি ভরাট ও পাকাকরণের কাজ এখনও অসম্পূর্ণ। ব্রিজের বড়লেখা উপজেলার আতুয়া অংশের সংযোগ সড়কটির মাটি দেবে গিয়ে কয়েকটি স্থানে সিমেন্ট ব্লক ও ইটের সলিং উঠে গেছে। অন্যদিকে ব্রিজের বড়লেখা উপজেলাধীন আতুয়া-ইসলামপুর এলাকা নদীভাঙনের কবলে পড়েছে। ব্রিজের কয়েক গজের ভেতরে অনেকটা ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, ঝুঁকিপূর্ণ এই সড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে ঠিকাদারের সাড়া না পাওয়ায় এলাকাবাসীর উদ্যোগে মাটি ফেলে আপাতত গর্ত ভরাট করা হলেও পানি নিস্কাশন ব্যবস্থার ত্রুটি এবং বালু ব্যবহার করায় বৃষ্টির পানিতে ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

নয়াগ্রামের বাসিন্দা আফতাব আলী বলেন, ‘সংযোগ সড়কটির কোনো অংশের কাজই সমাপ্ত না করেই ব্রিজটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া সঠিক হয়নি। বৃষ্টি হলেই রাস্তা পিচ্ছিল আর কর্দমাক্ত হয়ে যায়। সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদা উঠিয়ে উভয় অংশে আমরা মাটি ভরাট করেছি। তবে এটা কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। কর্তৃপক্ষের উচিত বিষয়টি দেখভাল করা।’

এ বিষয়ে বড়লেখা উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ ভূষণ পাল বলেন, ‘সংযোগ সড়কটি একেবারে নতুন। অ্যাপ্রোচ পাকাকরণের কাজ সম্পূর্ণ সম্পন্ন হয়নি এখনও। আর সংযোগ সড়কের কাজ সেতুর সঙ্গে নয়। আলাদা প্যাকেজ করা হয়েছে। উভয় পাশে পাকাকরণের জন্য নতুন স্কিম হাতে নেওয়া হয়েছে।

নদীভাঙনের বিষয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) মৌলভীবাজার কার্যালয়ের পওর শাখা-৪-এর উপসহকারী প্রকৌশলী সরওয়ার আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমি জেলায় নতুন যোগদান করেছি। সোনাই নদীর ভাঙন স্থানগুলো পূর্বের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেখে গেছেন। সরেজমিনে ভাঙনস্থলগুলো পরিদর্শন করে মেরামতের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সূত্র- দৈনিক সমকাল।