আগামীকাল বুধবার থেকে বিয়ানীবাজার পৌরশহরে মাছ বিক্রি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা। আজ মঙ্গলবার অনির্দিষ্টকালের জন্য মাছ বিক্রি বন্ধ করার ঘোষণা প্রচার করেন ব্যবসায়ীরা।

গত কয়েকদিন থেকে বিয়ানীবাজার পৌরশহরের মৎস্য ব্যবসায়ীরা পৌর কিচেন মার্কেটে তাদের দাবিকৃত নির্দিষ্ট স্থানে না দিলে বিয়ানীবাজারে মাছ বিক্রি করবেন না বলে প্রচার করেন। ২০১৬ সালে নির্মাণ শুরু হওয়া কিচেন মার্কেটে মাছ ও সবজি ব্যবসায়ীদের জন্য আন্ডারগ্রাউন রাখা হয়। তৎক্ষালিন পৌর প্রশাসকের সাথে এ নিয়ে মৎস্য ব্যবসায়ীরা বার বার কথা বলেন। ব্যবসায়ীদের জন্য কিচেন মার্কেটের আন্ডারগ্রাউন রেখে ১ম তলা লীজে বিক্রি করে দেয়া হয়। পূর্বের দায়িত্বশীলরা লীজের মার্কেটের প্রথম ও দ্বিতীয় তলা বিক্রি করায় বর্তমান দায়িত্বশীলরা সংকটে পড়েন। ব্যবসায়ীদের দাবিকৃত স্থান দিতে না পারলেও দ্বিতীয় তলায় তাদের জন্য জায়গা নির্ধারণ করেন। কিন্তু সবজি ব্যবসায়ীরা দ্বিতীয় তলায় যেতে রাজি হলেও মৎস্য ব্যবসায়ীরা বেঁকে বসেন।

মৎস্য ব্যবসায়ীদের দ্বিতীয় তলায় যেতে সম্মত করতে দফায় দফায় পৌর মেয়র আব্দুস শুকুরসহ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠকে কোন সমাধান হয়নি।

মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, কিচেন মার্কেটে যেতে তাদের আপত্তি নেই। তারা আন্ডারগ্রাউন ও দ্বিতীয় তলায় যাবেন না। আগে যেভাবে তারা ব্যবসা করেছেন এখন সেভাবে মার্কেটের প্রথম তলায় ব্যবসা করতে চান। এ বিষয়টি নিরসনের জন্য শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সাথে মৎস্য ব্যবসায়ীর প্রতিনিধি দল বৈঠক করেছেন। মন্ত্রী সমাধানের আশ্বাস দিলে কার্যত সেটা আশ্বাসে আটকে আছে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীদের একটি অংশ জানিয়েছে, পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসন শহরের কোথাও জায়গা বরাদ্ধ না করলে তারা কয়েকদিনের মধ্যে কুড়ারবাজার ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর এলাকার নির্দিষ্ট স্থানে মাছ বিক্রি করবেন। সে জায়গার মাছ বিক্রি করার জন্য সংশ্লিষ্টদের সাথে প্রয়োজনীয় কাজ সম্পাদন ইতিমধ্যে করে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।

মৎস্য ব্যবসায়ী মারুফ আহমদ বলেন, সওজ ও পৌরসভার কাজ করার জন্য অস্থায়ী বাজারটি আমাদের ছাড়তে হচ্ছে। আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি মার্কেটের প্রথম তলা কিংবা শহরের যেকোন জায়গা নির্দিষ্ট করে দিলে সেখানে আমার ব্যবসা চালিয়ে যাব। কোন অবস্থায় আন্ডারগ্রাউন কিংবা কিচেন মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় যাব না। তিনি বলেন, আপাতত ৫/৬দিন আমরা মাছ বিক্রি বন্ধ রাখছি। এর মধ্যে কোন সমাধান না হলে হয়তো বিয়ানীবাজারে আর মাছ বিক্রি করবো না।

বিয়ানীবাজার পৌর সভার মেয়র আব্দুস শুকুর বলেন, মৎস্য ব্যবসায়ীদের সিদ্ধান্তের কথা শুনেছি। তবে আমি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা করবো তারা যাতে শহরের পৌর মার্কেটে গিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। দ্বিতীয় তলা গিয়ে তারা দেখতে পারেন- সেখানে যদি সুবিধা করতে না পারেন তাহলে বিকল্প ব্যবস্থা আমরা সবাই মিলে দেখবো। কিন্তু ব্যবসায়ীরা আমাদের এ প্রস্তাবে রাজি হচ্ছেন না। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা সব রকম সুযোগ সুবিধা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছি। পৌর মার্কেটের নির্ধারীত জায়গার বাইরে বাজারে কোথাও কেউ মাছ বিক্রি করতে পারবে না- এতো প্রতিশ্রুতি দেয়ার পরও উনারা আমাদের কথায় আস্থা রাখতে কেন পারছেন না সেটাই বুঝতে পারছি না। তবে আমরা চেষ্টা করছি তাদের সাথে আলোচনা করে একটি ভাল সিদ্ধান্তে পৌছানোর।