বিয়ানীবাজার পৌর প্রশাসনের সঙ্গে শহরের প্রধান সড়কসহ বিভিন্ন সড়কের ফুটপাত দখলকারী হকারদের লুকোচুরি খেলা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। ঢাকঢোল পিটিয়ে পৌর প্রশাসনের লোকজন ফুটপাত হকারমুক্ত করে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই হকাররা যে যার অবস্থানে বসে যান। এমনকি শহরের ফুটপাত দখলমুক্ত করতে একাধিকবার পৌর প্রশাসন কঠোরতা দেখালেও কাজ হয়নি, যেই লাউ সেই কদু। কাজের কাজ কিছুই হয়নি! যেন নিয়মনীতির তোয়াক্কাই করছেন না হকাররা।

শুক্রবার বিকালে দীর্ঘদিন যাবত চলে আসা এ নাটকের অবসান ঘটিয়ে বিয়ানীবাজারকে একটি পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তুলতে ফুটপাতের হকার থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীসহ সকল শ্রেণির নাগরিকদের সহযোগিতা কামনা করেছেন পৌর মেয়র মো. আব্দুস শুকুর। তিনি বলেন, নিজের শহর ভেবেই বিয়ানীবাজারকে সুব্দর ও নানন্দিক শহরে পরিণত করতে সহযোগিতা করুন।

পৌরসভা কার্যালয় ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, পৌরশহরের প্রধান সড়কের দক্ষিণ বাজার থেকে উত্তর বাজার বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সড়কের ফুটপাতজুড়ে বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে থাকেন হকাররা। ফুটপাত পথচারীদের হেঁটে চলাচলের জন্য নির্মিত হলেও সেখানে অবৈধভাবে দোকান বসিয়ে ব্যবসা করে ভ্রাম্যমাণ এসব হকাররা। আর এতে শহরের সৌন্দর্য বিনষ্ট হবার পাশাপাশি পথচারীদের চলাচলে বেগ পোহাতে হয়। তাছাড়া হকারদের কারণে প্রধান সড়কে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। সর্বশেষ শুক্রবার সকালে এসব হকারদের সড়ক ও ফুটপাত থেকে উচ্ছেদ করে পৌর প্রশাসন। কিন্তু ঘন্টা দুয়েক পরই আগের অবস্থানে ফিরে আসে হকাররা। শেষমেষ বাধ্য হয়েই এদিন বিকালে পৌর মেয়রের উপস্থিতিতে উচ্ছেদ অভিযান চালায় পৌর প্রশাসন।

এদিকে, সকালে শহরের প্রধান সড়ক থেকে হকারদের উচ্ছেদ করার পর বিকালে ফের হকাররা দখলে চলে আসায় পথচারী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অনেকেই অভিযানকে লোকদেখানো বলে মন্তব্য করেন। কিন্তু দিনের শেষাংশে পৌর মেয়রের উপস্থিতিতে যখন ফের হকার উচ্ছেদ করা হলে স্বস্তি ফিরে পথচারী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মাঝে।

আওয়ামী লীগ নেতা অহিদুর রেজা মাসুম বলেন, বিয়ানীবাজার পৌরসভা দীর্ঘদিন ধরে শহরের প্রধান সড়কের ফুটপাত দখল ও হকারমুক্ত করতে অভিযান চালাচ্ছে। কিন্তু পৌরসভা কর্তৃপক্ষের বারবার পরিচালিত অভিযান সফলতার মুখ দেখেনি। সর্বশেষ শুক্রবার বিকালে এসব হকারদের শেষবারের মতো সতর্কবার্তা দিয়ে উচ্ছেদ করা হয়েছে। উচ্ছেদ অভিযানের পর শহরের ফুটপাতসহ চারপাশের পরিবেশ অত্যন্ত সুন্দর দেখাচ্ছে। আর এরকম সুন্দর ও নান্দনিক শহরই আমাদের কাম্য।

শহরের ফুটপাত হকারমুক্ত করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের একাধিক চেষ্টা সফলতার মুখ দেখেনি। এমনকি ফুটপাত হকারমুক্ত রাখতে একটি আধুনিক কিচেন মার্কেট নির্মাণেও তেমন একটা সমাধান আসেনি। আর সে কারণেই পৌর মেয়র মো. আব্দুস শুকুর বলছেন, সৃষ্ট পরিস্থিতি সমাধানে ফুটপাত দখলকারী হকার, স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ পৌরবাসীর মধ্যে ব্যক্তিক আত্মপর্যালোচনা ও সচেতনতা গড়ে তোলার পাশাপাশি প্রয়োজন প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ।