বিয়ানীবাজার পৌরশহরের প্রধান সড়ক ও ফুটপাত ফের অস্থায়ী সবজি ব্যবসায়ীদের দখলে চলে গেছে। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কিচেন মার্কেট ও কিচেন মার্কেট সংলগ্ন এলাকায় মাছ ও সবজি ব্যবসায়ীদের জন্য বসার স্থান করে দেয়ার তিন মাসের মাথায় সাধারণ মানুষের হাঁটার জায়গা ও সড়কজুড়ে শীতকালীন সবজির পসরা সাজিয়ে বসেছে ব্যবসায়ীরা। এদিকে, এ সড়কে পুনরায় অস্থায়ী সবজি বাজার বসায় ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পৌরশহরের প্রধান সড়ক ও কলেজ রোডের কিছু অংশে গত দুই/তিন দিন ধরে আবারও গড়ে উঠেছে অস্থায়ী সবজির বাজার। প্রথমদিকে এখানে মৌসুমী খুচরা সবজি ব্যবসায়ী বসলেও সম্প্রতি পৌর কিচেন মার্কেটের কয়েকজন সবজি ব্যবসায়ী নেমে এসেছেন সেখানে। পৌরশহরের প্রধান এ সড়ক ও ফুটপাত দখল করে পুনরায় সবজি বাজার গড়ে উঠায় যেখানে-সেখানে জমছে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। এছাড়াও ব্যস্ততম এ সড়কে ঘন ঘন যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে, গত দুই/তিন দিন ধরে এ অবস্থা দেখা গেলেও অস্থায়ী সবজি উচ্ছেদে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের কোন কার্যকরি প্রদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।

 

জানা যায়, পৌরসভাকে একটি যানজটমুক্ত পরিচ্ছন্ন শহর গড়তে পৌর মেয়র ও তার পরিষদ পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগ, ডাস্টবিন সরবরাহ করলেও তাদের গলাকাঁটা ছিল অস্থায়ী সবজি ও মাছ বাজার। গত বছরের ৬ অক্টোবর অস্থায়ী সবজি ও মাছ বাজার উচ্ছেদের মাধ্যমে পৌরশহর ও শহরতলীর সবকটি সড়কের ফুটপাতে অবৈধ দখলমুক্তসহ সবধরনের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে পৌরসভা। এর আগে নবনির্মিত পৌর কিচেন মার্কেটে মৎস্য ও সবজি ব্যবসায়ীদের জন্য ভিটা নির্দিষ্ট করে দিলেও মৎস্য ব্যবসায়ী সেখানে যেতে অস্বীকৃতি জানান। পরে ওই বছরের ১লা অক্টোবর সবজি ব্যবসায়ীদের মধ্যে পৌর কিচেন মার্কেটে ভিটা বরাদ্ধ করে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। ভিটা বরাদ্ধের পর দুই সপ্তাহের মধ্যেই প্রধান সড়ক ঘেষে গড়ে ওঠা অস্থায়ী বাজার ছেড়ে পৌর কিচেন মার্কেটে স্থানান্তরিত হন সবজি ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে, উচ্ছেদ অভিযানের পর মাছ ব্যবসায়ীরা শহরের বাইরে চলে গেলেও পরবর্তীতে চলতি বছরের ১৮ জুলাই শহরের কিচেন মার্কেটের পাশে জুবেদ আলী মার্কেটে মাছ ব্যবসায়ীদের নিয়ে আসা হয়। এর কয়েকদিন পর মাছ গলির পরের গলিতেই সবজি ব্যবসায়ীদের জন্য স্থান নির্দিষ্ট করে দেয়ায় কিচেন মার্কেটের দ্বিতীয় তলা ছেড়ে সেখান বসে সবজি বাজার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সবজি ব্যবসায়ী জানান, জুবেদ আলী মার্কেটের মাছ বাজারের পরে গলিতে প্রতিদিনই হাতেগোনা মাত্র কয়েকজন ক্রেতার দেখা মিলে। সবজি বাজার অনেক ভেতরে হওয়ায় সবজি কিনতে ক্রেতারা সেখানে যেতে চান না। বাধ্য হয়ে ক্রেতার আশায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নির্ধারিত স্থানে সবজি নিয়ে বসে থাকতে হয়। আর ব্যবসা যদি না হয় তাহলে তো আমাদের পরিবার-পরিজন না খেয়ে থাকবে, তাদেরকে নিয়ে পথে বসতে হবে। এজন্য আমরা বাধ্য হয়ে ফের সড়কে নেমে এসেছি।

স্থানীয় পথচারি ও ব্যবসায়ীরা জানান, পৌরসভা কর্তৃপক্ষ মাছ ও সবজি বাজারের জন্য স্থান নির্দিষ্ট করে দেয়ার পরও কিছু সবজি ব্যবসায়ীরা তা মানছেন না। এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে অন্য ব্যবসায়ীরাও সড়কে নেমে আসবে। এতে শহরের প্রধান সড়কের আকার ছোট হয়ে যাবে, ফলে যানজটের সৃষ্টি হবে। তাছাড়া যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনার জঞ্জাল-স্তূপ জমে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে বিয়ানীবাজার পৌরসভার প্যানেল মেয়র (ভারপ্রাপ্ত মেয়র) ছায়ফুল আলম ঝুনু বলেন, শহরের প্রধান সড়ক থেকে সরে যাবার জন্য আমরা ইতোমধ্যে অস্থায়ী সবজি ব্যবসায়ীদেরকে নির্দেশ দিয়েছি। আগামীকালকে মধ্যে তারা সড়ক থেকে না সরলে আমরা উচ্ছেদ অভিযান চালাবো।