চার বছরেরও বেশি সময় ধরে বিয়ানীবাজার-চন্দরপুর সড়কে দুর্ভোগ-ভোগান্তি শেষ হচ্ছে না। বিভাগীয় ও জেলা শহর সিলেটের সাথে যোগাযোগের বিকল্প এ সড়কের সংস্কার কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দুই উপজেলার লাখো মানুষের। করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে এ রাস্তা নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। পরে উপজেলার অন্যান্য উন্নয়ন কাজ শুরু করা হলেও এ রাস্তার নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এ পথে যাতায়াতকারীদের। করোনার অজুহাত ছাড়াও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের খামখেয়ালিতে অল্প শ্রমিক ও সংস্কার কাজে ধীর গতির অভিযোগ স্থানীয়দের।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৫ মাসে সড়কের মাথিউরা বাজার থেকে খলাগ্রাম অংশের ১ কিলোমিটার রাস্তা শুধুমাত্র মেকাডম করে ফেলে রাখা হয়েছে। কাজ বন্ধ থাকায় সড়কের ওই অংশের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও রাস্তার পাশে ইট ফেলে রাখায় শুধু অর্ধেক রাস্তা দিয়ে যানচলাচল করছে লোকজন। বিভিন্ন জায়গায় বড় গর্তে এবং রাস্তার পাশে কেটে রাখা নালায় পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তখন গর্তগুলো দেখলে মনে হয়, একেকটি বড় পুকুর। সড়কজুড়ে রয়েছে অসংখ্য গর্ত আর খানাখন্দ।

স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, ‘সিডিউলে’ নির্মাণ সামগ্রি দর বাজার দরের চেয়ে কম রাখা, সড়কের নাজুক ড্রেনেজ ব্যবস্থা, শ্রমিকদের মুজুরী বৃদ্ধি এবং পরিবহন খরচের ব্যয় হিসাবসহ বিভিন্ন কারণে বার বার টেন্ডার আহবান করার পরও বিয়ানীবাজার-চন্দরপুর সড়কের সোয়া ৪ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার কাজে কোন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসেনি। শুরু থেকে এ প্রতিষ্ঠানের লোকবল সংকট থাকায় বার বার কাজ বন্ধ ছিল। চলাচল অনুপযোগী হলেও বিকল্প সড়ক না থাকায় গত ৪ বছর ধরে বাধ্য হয়েই চলাচল করতে হচ্ছে স্থানীয়দের। ফলে দীর্ঘ ভোগান্তি ও দূর্ভোগে পড়া চালক ও যাত্রীরা দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান।

উপজেলা প্রকৌশল অফিসসূত্রে জানা গেছে, সংস্কার ব্যয় বাড়িয়ে তৃতীয় দফায় টেন্ডার আহবান করলে সোয়া ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার কাজ পায় মেসার্স রাশিদুজ্জামান পিটার নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে গত বছরের অক্টোবর মাসে রাস্তারটি সংস্কার কাজ শুরু করে। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সড়কের কাজ শেষ করার কথা রয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির।

ওই রাস্তায় দিয়ে যাতায়াতকারী মারুফ, জুনেদ, হাসান, আরিফসহ বেশ কয়েকজন যাত্রী জানান, এ রাস্তার উপর দিয়ে কোন গাড়ি যেতে চায় না। ফলে গাড়ির জন্য দীর্ঘ সময় রাস্তার পাশে দাড়িয়ে থাকতে হয়। কয়েকগুন বেশি ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। পরিবহণ চালক হুমায়ুন জানান, এ রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালালে গাড়ির টায়ার স্প্রিংসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যায়। তাই সচরাচর আমরা এই রাস্তায় গাড়ি চালাই না।

বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান বলেন, কাজ শুরু করার আগে আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে বিয়ানীবাজার-চন্দরপুর সড়ক সংস্কার কাজ শেষ করতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। এরপর করোনা দূর্যোগের কারণে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তিনি বলেন, এখনও করোনার কারণে লোকবলের সংকট থাকায় কিছুটি বিলম্ব হচ্ছে। তবে অচিরেই রাস্তাটি সংকার কাজ পুনরায় শুরু করা হবে।

৪ বছরেও শেষ হয়নি বিয়ানীবাজার-চন্দরপুর সড়কের দুর্ভোগ!