বিয়ানীবাজার-চন্দরপুর সড়কের খলাগ্রাম-কান্দিগ্রাম থেকে উপজেলার শেষ সীমানা পর্যন্ত সড়কের সংস্কারকাজ শেষ না হতেই অসংখ্য ফাটল দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও কার্পেটিং উঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের সংস্কার শেষ হওয়ার আগে ফাটল দেখে এলাকাবাসী সংস্কার কাজের মান নিয়ে শংকা প্রকাশ করেন। তাদের অভিযোগ, কাজে সঠিক তদারকি না থাকা ও নিম্নমানের বিটুমিন-কোয়া ব্যবহার করায় সড়কে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে৷

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সংস্কার কাজ শুরুর ১০-১৫ দিনের মাথায় বিয়ানীবাজার-চন্দরপুর সড়কের অনেক জায়গায় কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। সড়ক জুড়ে বিভিন্ন আকারে ফাটল দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসী জানান, যত সময় যাচ্ছে সড়কের ফাটল বড় হচ্ছে। দীর্ঘ দুর্ভোগের পর সংস্কার কাজ শুরু হওয়ায় জনমনে স্বস্থি ফিরলেও এখন দেখা দিয়েছে শংকা।

উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বছরের কয়েক দফা বন্যায় ও অতিবৃষ্টিতে বিয়ানীবাজার-চন্দরপুর সড়কটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরবর্তিতে গত বছরের শেষ দিকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের (এলজিইডি) তত্ত্ববধানে এ সড়কের খলাগ্রাম-কান্দিগ্রাম অংশ থেকে উপজেলার শেষ সীমানা সেতু পর্যন্ত অংশের সংস্কার কাজের দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে ১ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সড়কটির সাড়ে ৪ কিলোমিটার সংস্কারের কাজের জন্য নিয়োগ দেয়া হয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স মুহিবুর রহমান ট্রেডার্স’কে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এ সড়কের সংকার কাজও শুরু করেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি কাজ বন্ধ দেয়। পরে পুনরায় কাজ শুরু করে চলতি মাস পর্যন্ত কাজ প্রায় সম্পন্ন করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।

স্থানীয় বাসিন্দা আতিকুর রহমান জানান, সংস্কার কাজ শুরুর প্রথম থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারসহ সংস্কার কাজে নানা অনিয়মের অভিযোগ তোলা হয়। সড়ক অবরোধ করে আমরা প্রতিবাদ করি। কিন্তু দুই একদিন কাজ বন্ধ রেখে নিম্নমানের কোয়া দিয়েই সড়কের কাজ হয়েছে। নালবহর উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি শাহাব উদ্দিন মৌলা বলেন, বালুর বদলে মাটি দিয়েও মেকাডম হয়েছে। সড়কের গর্তগুলো সঠিক নিয়মে ভরাট না করায় এখন দেখা দিয়েছে ফাটল। এ দায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দায়িত্বশীল কর্মকর্তাকেও নিতে হবে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মুহিবুর রহমান কোকিল জানান, ‘সড়কটির যানবাহন ও মালামালের ধারণ ক্ষমতা ১০টন হলেও সংস্কার কাজ চলাচাকালীন সময়ে দুই/তিন গুণ বেশি লোডের ভারী যানবাহণ চলাচলের কারনের সড়কটির কয়েক জায়গায় ফাটল ও কার্পেটিং উঠে গিয়েছে। এ অংশগুলোও ইতিমধ্যে মেরামত করা হয়েছে। তাছাড়া সড়কটির সংস্কার কাজও এখনো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

এ ব্যাপারে বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রকৌশলী রামেন্দ্র হোম চৌধুরী বলেন, ‘সড়কটির সংস্কারকাজ প্রায় শেষ। তবে যেসব জায়গায় ফাটল ধরেছে কিংবা কার্পেটিং নষ্ট হয়েছে, তা সংস্কার করে দেয়ার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলে দেয়া হবে।’