সিলেট-বিয়ানীবাজার-চন্দরপুর সড়কের সংস্কার কাজের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ এখনো শেষ হয় নি। বর্তমানে এ সড়কের সংস্কার কাজ বন্ধ রয়েছে। কবে গুরুত্বপূর্ণ সড়কের সংস্কার কাজ শেষ হবে, তা কেউ সঠিক করে জানাতে পারেনি। সংস্কারের নামে সড়কটি ভেঙে ফেলায় একদিকে যেমন সড়কের পার্শ্ববর্তী বসতবাড়ি, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, অপরদিকে সৃষ্টি হয়েছে অসহনীয় দূর্ভোগ।

বিয়ানীবাজার পৌরশহরের প্রধান সড়ক থেকে চন্দরপুর ও গোলাপগঞ্জের মধ্যদিয়ে সিলেট জেলা সদরে যুক্ত হয়েছে এ সড়কটি। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। এছাড়া এই সড়কের দুই পাশে রয়েছে বসতবাড়ি, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, প্রথমদিকে খুব অল্প কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে খুব ধীরগতিতে কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু এ সড়কের সংস্কার কাজ শেষ হওয়া দূরে থাক, এখনো পর্যন্ত সড়কটি সংস্কার উপযোগী করে তুলতে পারে নি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।

স্থানীয়রা জানান, শুরু থেকেই সংস্কার কাজে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি গড়িমসি করছে। এ ছাড়া সংস্কার কাজে বালির বদলে মাটি ব্যবহারসহ বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম হচ্ছে। এসব অনিয়ম রোধে সড়ক অবরোধসহ বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ করলেও কয়েকদিন কাজ বন্ধ করে দেয় উপজেলা প্রকৌশল অফিস। পরবর্তীতে আবারো কাজ শুরু হলেও কয়েকদিন অতিবাহিত হওয়ার পর বর্তমানে সড়কের সংস্কার কাজ বন্ধ রয়েছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কাদা-বালুতে পুরো রাস্তা একাকার হয়ে আছে। কিছু কিছু জায়গায় বালু ফেলে হেঁটে চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। তাছাড়া সড়কের ওপর যেখানে-সেখানে রাখা হয়েছে বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী। এতে রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা, মাইক্রোবাস থেকে শুরু করে কোনো যানবাহনই ওই সড়কে চলাচল করতে পারছে না। ৬ মাসেরও বেশি সময় ধরে শুধু পুরনো সড়ক অপসারন ও ভাঙ্গার কাজ শুরু করা হয়েছে। মূল সড়কের কাজ এখনো শুরুই হয়নি।

সড়কের পাশের মুদি ব্যবসায়ী দেলওয়ার হোসেন জানান, সড়কটি এভাবে পড়ে থাকায় ইতিমধ্যে তারা ব্যবসায়ীকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। অতি প্রয়োজনেও সড়কে ভোগান্তির কারণে মানুষ তাদের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে আসতে চায় না। এরকম গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক এভাবে দিনের পর দিন যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে পড়ে থাকায় এখানকার ব্যবসায়ী চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। এসময় সড়কটি নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান তিনি।

বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ফেব্রুয়ারি মাসে সড়কটি সংস্কারের জন্য মেসার্স মুবিবুর রহমান নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতিপত্র দেয়া হয়। এ সড়ক সংস্কারে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৭১ লাখ ১৮ হাজার টাকা। গত ৩০ জুন মেয়াদ শেষ হলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বৈরী আবহাওয়ার জন্য সংস্কার কাজ শেষ করতে না পারায় উপজেলা প্রকৌশল অফিস সড়কটি পরিদর্শন করে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সংস্কার কাজে মেয়াদ নির্ধারিত করে।

বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রকোশল অফিসের অধীনে এ সড়কের চার কিলোমিটার সংস্কার কাজ শুরু হয়েছিল চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে। সাত মাসেও কাজ শেষ না হওয়ায় সড়কটি ব্যবহারকারী দুই উপজেলার লাখো মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।

উপজেলা প্রকৌশলী রামেন্দ্র হোম চৌধুরী বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে পূর্বের মেয়াদে কাজ শেষ না হওয়ায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সংস্কার কাজের মেয়াদ নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। তবে আমরা আশা করছি দ্বিতীয় মেয়াদের শেষ হবার পূর্বেই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সড়কটির সংস্কার শেষ করবে।