সিলেট নগরীর দক্ষিণ সুরমায় দুর্ধর্ষ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টায় দক্ষিণ সুরমার গোটাটিকর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ছিনতাইয়ের নেতৃত্বে ছিলেন ২৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জুয়েল। তিনি দক্ষিণ সুরমার গঙ্গানগর হবিনন্দি এলাকার মৃত শামসু মিয়ার ছেলে।

বুধবার ছিনতাইয়ের শিকার নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে জুয়েলসহ আরো দুই জনের বিরুদ্ধে এসএমপি’র মোগলাবাজার থানায় মামলা (নম্বর-৯) দায়ের করেছেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- গঙ্গানগর হবিনন্দি এলাকার মৃত আব্দুল মতিনের ছেলে রানা ও রিয়াজ মিয়ার ছেলে জাওয়াদ।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, জকিগঞ্জ উপজেলার গেচুয়া গ্রামের মৃত আব্দুল খালিকের ছেলে নজরুল ইসলাম (৩২) মঙ্গলবার রাতে নগরীর উপশহরে বোনের বাসা থেকে বিয়ানীবাজারে যাওয়ার উদ্দেশ্যে তার মা গুলশান মরিয়ম, বোন ও ভাগ্নেকে নিয়ে সিএনজি অটোরিকশাযোগে রওয়ানা হন। পথিমধ্যে দক্ষিণ সুরমার সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের গোটাটিকর এলাকার সুন্দরবন কমিউনিটি সেন্টারের সামনে আসা মাত্র পেছন দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেলে দুই ছিনতাইকারী সিএনজি অটোরিকশার ডানপাশে বসা গুলশান মরিয়মের হাত থেকে কালো হ্যান্ড ব্যাগ কেড়ে নিয়ে। ব্যাগের মধ্যে স্বর্ণালঙ্কার, দামী স্মার্টফোন ও নগদ টাকাসহ প্রায় ৪ লাখ ২২ হাজার টাকার মালামাল ছিল। ছিনতাই করে কিছুটা সামনে যাওয়ার পর ছিনতাইকারীদের মোটরাইকেলের তেল শেষ হয়ে যাওয়ায় তারা হবিনন্দি সরকারি প্রাইমারি স্কুলের পাশে একটি টিনশেড দোকানের সামনে মোটরসাইকেল রেখে পালিয়ে যায়। সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে নজরুল সেই দোকানের সামনে এসে দাঁড়ান। কিছুক্ষণ পর ২৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জুয়েল সেখানে হাজির হয়ে ছিনতাইকাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি নিজের বলে দাবি করেন। এসময় নজরুল তাকে ছিনতাইকারী হিসেবে চিনে ফেলেন এবং ঝাপটে ধরে ‘ছিনতাইকারী, ছিনতাইকারী’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন এবং ছিনতাইকারী চক্রের আরো কয়েকজন সদস্য সেখানে উপস্থিত হন। এলাকাবাসী জুয়েলকে চিনতে পেরে নজরুলকে অনুরোধ করেন তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু নজরুল পুলিশ আসার আগ পর্যন্ত জুয়েলকে ছাড়তে আস্বীকৃতি জানান। এসময় অন্য ছিনতাইকারীরা নজরুল ও তার বৃদ্ধা মা, বোন ও ভাগ্নেকে হুমকি ধামকি দিয়ে জুয়েলকে ছাড়িয়ে নেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ছিনতাইকারীরা কৌশলে মোটরসাইকেলে সেই স্থান থেকে পালিয়ে যান। পরদিন বুধবার নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে মোগলাবাজার থানায় জুয়েলসহ আরো দুই ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মোগলাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আখতার হোসেন। তবে এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করেনি পুলিশ। জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ওসি।

তথ্যসূত্র- একাত্তরের কথা।