বন্যা ও বর্ষণে বিয়ানীবাজার উপজেলার ১৩৫ কিলোমিটার গ্রামীণ পাকা সড়কের মধ্যে ১৫টি সড়কের ২৩ কিলোমিটার বিধ্বস্ত হয়েছে। এসব সড়কের পুনর্বাসন বা সংস্কার ও মেরামত কাজে ব্যয় হবে সাড়ে ৩ কোটি টাকা। কয়েক দফা বন্যা ও অতি বর্ষণে উপজেলার ৮ ইউনিয়ন ও পৌরসভার গ্রামীণ সড়কগুলো বিধ্বস্ত হওয়ায় সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। দুর্গত এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক সংস্কার ও মেরামতের।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ সড়কের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপন শেষ করেছে উপজেলা প্রকৌশল অফিস। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপন করার পাশপাশি সড়কগুলো পুর্নবাসন বা সংষ্কার কাজ করতে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশল অফিসের কর্মকর্তারা গত ৮দিন ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করে গ্রামীণ সড়কগুলোর ক্ষয়ক্ষতি নিরূপন করেন বলে জানান উপজেলা প্রকৌশলী রামেন্দ্র হোস চৌধুরী। তিনি বলেন, ক্ষয়ক্ষতি নিরূপন করে এসব সড়কের পুর্নবাসন বা সংস্কারের জন্য প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে ৩ কোটি টাকা।

উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা যায়, লাউতা-আছিরগঞ্জবাজার সড়কের ২ কিলোমিটার, মুরাদগঞ্জ-গড়াউন সড়কের ২ কিলোমিটার, পাঞ্জেপুরি-খাড়াভরা সড়কের ১ কিলোমিটার, ঈদগাহবাজার-নালবহর সড়কের ৫শ’ মিটার, শেওলা-বালিঙ্গা-চারাবই সড়কের ৩ কিলোমিটার, শহীদ টিলা-কাজির বাজার সড়কের দেড় কিলোমিটার, খাসা-কাজিরবাজার সড়কের ৫শ’ মিটার, বৈরাগীবাজার-আঙ্গারজুর সড়কের ১ কিলোমিটার, আঙ্গারজুর আরএসডি সড়কের ৫শ’ মিটার, তিলপাড়া-মাটিঝুরা-অলিমপুর সড়কের আড়াই কিলোমিটার, বড়দেশ-মনটেখা-সারপার সড়কের ২কিলোমিটার, নবাং-রায়বাসী-দুধবকশী সড়কের ৩ কিলোমিটার, মেওয়া বটতলা সড়কের ৫শ’ মিটার, পূর্ব দুবাগ-গয়লাপুর সড়কের ১ কিলোমিটার ও মাটিঝুরা-টুকা-পীরেরচক (চলমান) সড়কের ২ কিলোমিটার বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাথিউরা ইউনিয়নের ঈদগাহবাজার-নালবহর সড়কের খলাগ্রাম ও আরেঙ্গবাদ অংশে বন্যা কবলিত এলাকায় ধ্বস নেমে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ সড়কে ভাঙ্গন দেখা দেয়ায় রড় বেরিয়ে পড়ায় যেকোন সময় দুর্ঘটনার আশংকা করছেন এলাকাবাসী। একই অবস্থা নবাং-রায়বাসী-দুধবকশী সড়কের। সড়কের পলেস্তারা উঠে গিয়ে খানাখন্দ ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ সড়কের মধ্যবর্তী অংশে পাকা কাজের কোন চিহ্ন পর্যন্ত নেই।

খলাগ্রামের বাসিন্দা সলমান উদ্দিন বলেন, রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় আমরা খুব সমস্যা পড়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তা মেরামত করে সংশ্লিষ্টরা আমাদের দুর্ভোগ লাঘব করবেন।

দুধবকশী গ্রামের শরিফুল ইসলাম বলেন, সড়ক দিয়ে চলা মানে নিজের সাথে যুদ্ধ করা। বিয়ানীবাজার পৌরশহর আমাদের কষ্টের শেষ নেই। এসড়ক ব্যবহারকারি অটোরিক্সা চালক বাবুল আহমদ বলেন, সড়কের দুরাবস্থার কারণে সপ্তাহের কমপক্ষে তিনবার গাড়ি নিয়ে ওয়ার্কসপে যেতে হয়। এ অবস্থা থাকলে গাড়ি চালানো বন্ধ করা ছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই।

শহীদ টিলা-কাজিরবাজার সড়ক দ্রুত সময়ের মধ্যে সংষ্কার করার দাবি জানিয়ে ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবির বলেন, সড়কের বড় বড় গর্তগুলো একবার পড়ে গেলে ঠেলে তুলতে হয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়ক চলাচল উপযোগী করে কয়েক গ্রামের হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তি লাঘব করতে দিনি দায়িত্বশীল অনুরোধ জানান।

বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রকৌশলী রামেন্দ্র হোম চৌধুরী বলেন, বন্যা ক্ষতিগ্রস্থ সড়কের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপন করে এসব সড়কের পুনর্বাসন র‌্যয় মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কাজ চলছে। ১৫টি সড়কের ২৩ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা চলাচল অনুপযোগী। আমরা এরই মধ্যে কয়েকটি সড়কের ভারি যান চলাচল করতে বাধা দেয়ার জন্য স্থানীয়দের বলে এসেছি।