বছর খানেক থেকে বিদ্যুৎ লাইন টেনে রাখলেও সংযোগ দেয়া হয়নি। ভুক্তভোগীরা পল্লীবিদ্যুৎ অফিসে বার বার যোগাযোগ করেও সংযোগ পাননি। অথচ বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়া কুড়ি পরিবারকে জুলাই মাসের বিদ্যুৎ বিল পাঠিয়েছে পল্লীবিদ্যুৎ। ভুতুড়ে এ কান্ডটি ঘটিয়েছে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির বিয়ানীবাজার জোনাল অফিস। যার ফলে বিয়ানীবাজার উপজেলার লাউতা ইউনিয়নের কালাইউরা গ্রামের কুড়ি পরিবারের মধ্যে বিদ্যুৎ বিল আতংক বিরাজ করছে।

বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়া ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা বিদ্যুৎ ব্যবহার না করে বিল পেয়ে আতকে উঠেন। অনেকেই এ বিষয়টি বিয়ানীবাজার জোনাল অফিসে যোগাযোগ করেও প্রথম দিকে কোন প্রতিকার পাননি। পল্লীবিদ্যুৎ অফিস থেকে তাদের জানিয়ে দেয়া হয় বিল পরিশোধ করতে। এতে স্থানীয়ভাবে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে বিয়ানীবাজার পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বিলগুলো উঠিয়ে নেয়। এর মধ্যে হয়রানি থেকে বাঁচতে কয়েকজন বিল কয়েক কিলোমিটার দূরবর্তী বিদ্যুৎ অফিসে নিজ দায়িত্বে জমা দেন। কেউ কেউ বিলের টাকা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে জমাও দিয়েছেন।

ভুক্তভোগীরা জানান, লাইন টানা হলেও মিটার সংযোগ পাননি। এছাড়া সম্প্রতি ঝড়ে বেশ কয়েকটি খুটি হেলে পড়লে পল্লীবিদ্যুৎ অফিসে জানানো হয়। কিন্তু দায়িত্বশীলরা এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেননি। যার কারণে ভুক্তভোগী এলাকার মানুষের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে।

কালাইউরা গ্রামের জামিল আহমদ বলেন, বিদ্যুৎ লাইন টানা হলেও আমরা দীর্ঘদিন থেকে সংযোগ পাচ্ছি না। বিদ্যুৎ অফিসে দরনা দিয়েও কোন কাজ হয়নি। এখন দেখি বিদ্যুৎ পাওয়ার আগেই বিল দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, পরবর্তীতে হয়রানিতে পড়তে পারেন এ আতংক থেকে কয়েক জন ব্যাংকে বিলের টাকা জমা দিয়েছেন। আমি নিজে বিয়ানীবাজার পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসে গিয়ে বিল জমা দিয়ে এসেছি। আলম হোসেন বলেন, আমার ঘরে ট্রান্সফরমার গত রমজানের আগে থেকে রাখা রয়েছে। আমরা সংযোগ পেতে বার বার যোগাযোগ করলেও স্থানীয় অফিস থেকে কোন প্রতিকার পাচ্ছি না। এর মধ্যে বিল আসায় গ্রামের বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। আলমের নামে বিদ্যুৎ মিটার (১৪৭৩৩৯৪৪) ৩০ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার দেখানো হয়েছে। বিল এসেছে ১৫৬ টাকা।

কানলি গ্রামের কুতিল মিয়া বলেন, হেলে পড়া খুঁটি আমরা নিজ খরচে ঠিক করে দিলে তারা (পল্লবিদ্যুৎ) সংযোগ দেবে বলে জানায়। বিদ্যুৎ খুঁটি ঠিক করার নামে পল্লীবিদ্যুৎ আমাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে চাইছে।

এ বিষয়ে পল্লীবিদ্যুৎ বিয়ানীবাজার জোনাল অফিসের উপব্যাবস্থাপক (ডিজিএম) অভিলাস চন্দ্র পাল বলেন, ভুল করে বিদ্যুৎ বিল চলে যাওয়ায় বিলগুলো অফিস থেকে সংগ্রহ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যারা বিল পরিশোধ করেছেন তাদের টাকা ফেরত দেয়া হবে। তিনি বলেন, গ্রামের বিভিন্ন মানুষের আপত্তি কারণে সংযোগ আটকে আছে। একই কারণে বিদ্যুৎ লাইন ও খুঁটিতে কাজ করা যাচ্ছে না। নিজ খরচে হেলে পড়া খুঁটি গ্রামবাসীকে মেরামত করার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এ অভিযোগ সত্য নয়। এরকম কথা অফিস থেকে কাউকে বলা হয়নি।