আপন চাচি ও তার পরকীয়া প্রেমিকের অবৈধ মেলামেশা দেখে ফেলায় তিন বছরের শিশু সাহেল আহমদ সোহেলকে নির্মমভাবে খুন করা হয়। সোমবার বিকেলে সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (৫ম) আদালতের বিচারক নওরিন করিমের এজলাসে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে খুনের বিবরণ দেন নিহত সোহেলের চাচী সুরমা বেগম (৩৮)। তবে পরকীয়া প্রেমিক নাহিদুল ইসলাম ইব্রাহিম (২৬) আদালতে স্বীকারোক্তি দিতে অস্বীকার করায় তাকে ৪দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

রোববার (৭ জুন) সকালে বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনিয়নের উত্তর আকাখাজনা গ্রামে চাচীর অবৈধ সম্পর্ক দেখে ফেলায় সাহেল আহমদ সোহেলকে হত্যা করে পরকীয়া প্রেমিক নাহিদুল ও চাচী সুরমা বেগম। এরপর মরদেহ ড্রামে কম্বল দিয়ে মুড়িয়ে লুকিয়ে রাখেন তারা।

এ ঘটনার পর সোহেলকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। মসজিদের মাইকেও তার খোঁজে প্রচারণা চালানো হয়। এ সময় চাচী সুরমা বেগম তার ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ রাখাসহ রহস্যজনক আচরণ করতে থাকেন। এতে নিহত শিশুর বাবাসহ এলাকার লোকজনের সন্দেহ হলে চাচীর ঘরে তল্লাশি শুরু করেন। একপর্যায়ে রাত ৮টার দিকে সুরমা বেগমের বাথরুমের ড্রামের ভেতর কম্বল দিয়ে মোড়ানো শিশু সোহেলের নিথর দেহ পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রোববার সন্ধ্যায় চাচী সুরমা বেগম ও তার পরকীয়া প্রেমিক নাহিদুল ইসলাম ইব্রাহিমকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। এর মধ্যে চাচি সুরমা বেগম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

এদিকে, আদালতে স্বীকারোক্তি না দেয়ায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) হারুন উর রশিদ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (৫ম) আদালতে ইব্রাহিমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে নাহিদুলের চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিলেট জেলা পুলিশের সহকারী মিডিয়া অফিসার ও ডিবি পুলিশের ওসি সাইফুল আলম। তিনি বলেন, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ায় সুরমা বেগমকে জেলহাজতে ও তার পরকীয়া প্রেমিককে চারদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় নিহত সোহেলের বাবা খসরু মিয়া বাদী হয়ে রোববার রাতে তিনজনের নাম উল্লেখ করে বিয়ানীবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার পর ঘটনাস্থল থেকে নাহিদুল ইসলাম ইব্রাহিম ও সুরমা বেগমকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। নাহিদুল উপজেলার চারখাই মধুরচক এলাকার কামাল মিয়ার ছেলে হলেও তিনি উত্তর আকাখাজনায় তার মামার বাড়িতে থাকতেন।

‘এবি টিভি’র সর্বশেষ প্রতিবেদন-