বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের একটি শ্রেণি কক্ষে ছাত্রলীগ কর্মী খালেদ আহমদ লিটুকে গুলি করে গত ১৭ জুলাই হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পনের দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ হত্যাকাজে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি। সম্প্রতি পুলিশের হাতে আটক চার আসামী রিমান্ড শেষ হয়েছে। আসামীদের রিমান্ড শেষ হলেও এ হত্যাকান্ডের লক্ষণীয় কোন অগ্রগতি হয়নি।

লিটু হত্যাকান্ড নিয়ে বলতে গিয়ে বিয়ানীবাজার থানার ওসি চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। রিমান্ড থাকা আসামীরা আমাদের অনেক তথ্য দিয়েছে। এখন সেগুলো যাচাই বাচাই চলছে। এসব তথ্য মামলার তদন্তের স্বার্থে গণ মাধ্যমে প্রকাশ করা যাচ্ছে না। পুরো তদন্ত শেষ হলে গণমাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।

গত শনিবার লিটু হত্যার পর পরই আটক চার ছাত্রলীগ কর্মীকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে আসা হয়। রিমান্ডের চার আসামীকে প্রথমে পৃথক এবং পরবর্তীতে এস সাথে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ জিজ্ঞাসাবাদে মামলার অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আটককৃতরা পুলিশকে জানিয়েছে। তাদের দেয়া তথ্যের সত্যতা যাচাই করছে পুলিশ- জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা।

ওই কর্মকর্তা জানান, লিটু হত্যায় একটি পাইপগান জাতীয় অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে। অস্ত্রটি ফাহাদের বলে তারা নিশ্চিত হয়েছেন। ঘটনার সময় এ চার আসামী ছাড়াও আরও কয়েকজন কক্ষের ভেতর ও বাইরে ছিল। লিটু গুলিবিদ্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত কলেজ ক্যাম্পাসে উপজেলা ছাত্রলীগের পাবেল গ্রুপের নেতাকর্মীরা মিছিল করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এসময়ই গুলির ঘটনাটি ঘটে।

রিমান্ড শেষে চার আসামীকে সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। এ আসামী চারজনের মধ্যে একজনের এজমা রোগ (শ্বাসকষ্ট) রয়েছে। তাকে দুইদিন করে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বিয়ানীবাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম বলেন, লিটু হত্যা মামলার তদন্ত সঠিকভাবেই এগুচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা তদন্ত শেষ করতে পারবো।

উল্লেখ, গত ১৭ জুলাই সোমবার দুপুরে খালেদ আহমদ লিটুর গুলিবিদ্ধ লাশ বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের একটি শ্রেণি কক্ষ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন রাতে লিটুর পিতা খুলিলুর রহমান বাদী হয়ে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা পাভেল গ্রুপের ছয় নেতাকর্মী ও পল্লব গ্রুপের একজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ৫জন আসামী করে একটি হত্যা মামলা (১৩)-১৭-০৭-১৭ দায়ের করেন। এ মামলায় আসামী দেখিয়ে পুলিশের হাতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক পৌরসভার ফতেহপুর গ্রামের হোসেন আহমদের পুত্র ফাহাদ আহমদ (২৩), কসবা নাদুর গোষ্টির মাসুক আহমদ এর পুত্র কামরান আহমদ (২৪), খাসা গ্রামের সাহাব উদ্দিনের পুত্র এমদাদুর রহমান (২২) ও দাসগ্রামের আবুল খালেদের পুত্র দেলোয়ার হোসেন মিষ্টু (২৮) কে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এ মামলার অপর আসামী দাসগ্রামের মৃত নিজাম উদ্দিনের পুত্র নুরুল ইসলাম শিপু (২৪), ফতেহপুর গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের পুত্র কাওছার (২৫) এবং নয়াগ্রামের কালা মিয়া কসাইয়ের পুত্র ছাত্রলীগ পল্লব গ্রুপের কর্মী সাহেদ আহমদ (২৪) পলাতক রয়েছে। পুলিশ মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেফতারকৃত চার ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে এ মামলায় আসামী দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে।