বিয়ানীবাজারে পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের উত্তর দুবাগ গ্রামের সাইদুর রহমানের দুই ছেলের মধ্যে। যার জের ধরে বেশ কিছুদিন ধরে উভয়পক্ষের মধ্যে ঝগড়া ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ গত ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টার দিকে বড় ভাই এবাদ উদ্দিনের (৫৫) হামলায় রক্তাক্ত হয়েছে ছোটভাই আব্দুল আহাদ (৪৮)। এ ব্যাপারে আব্দুল আহাদ বাদী হয়ে গত ২১ সেপ্টেম্বর বিয়ানীবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে আবু তাহের চৌধুরী (২৩) নামের এজাহারভুক্ত এক আসামীকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। সে মামলার প্রধান আসামী এবাদ উদ্দিনের ছেলে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ভূ-সম্পত্তি সমান ভাগে ভাইদের মধ্যে বন্টন হওয়ার কথা থাকলেও ক্ষমতার অপব্যবহার এবং দাপট দেখিয়ে জোরপূর্বক বেশিরভাগ অংশ ভোগ করে আসছিল বড়ভাই এবাদ উদ্দিন। এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়ে ইতিপূর্বে গত ১৯ সেপ্টেম্বর ছোটভাই আব্দুল আহাদকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে দিনদুপুরে মারধর করে গুরুতর জখম করে অচেতন অবস্থায় ফেলে রাখে এবাদ উদ্দিন, তার স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েরা। পরে আব্দুল আহাদের স্ত্রী-সন্তানদের চিৎকার চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে পৌছে অচেতন অবস্থায় আব্দুল আহাদকে উদ্ধার করে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করে। এরপর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

এ নিয়ে আব্দুল আহাদ অভিযোগ করে বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে ছিলাম। আমি প্রবাসে থাকার সুবাধে পৈত্রিক ভূ-সম্পত্তি আমার বড়ভাই ভোগদখল করে আসছিলেন। দেড় বছর আগে দেশে ফিরে এসে বড়ভাইয়ের কাছে পৈত্রিক সম্পত্তির ভাগ চাওয়ার পরও তিনি ভাগ দিতে নানা রকম টালবাহানা শুরু করে দেন। পিতার ছেলে হিসেবে কেউ অংশে বেশি, আবার কেউ কম পাবে, তাতো হয়না। এসব নিয়ে প্রায়ই এবাদ উদ্দিন আমাকে প্রাণে হত্যার হুমকি দিতেন গত ১৯ সেপ্টেম্বর সমান ভাগ চাইতে গিয়ে আমাকে মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত করে অচেতন অবস্থায় ফেলে যায় আমার বড়ভাই এবাদ উদ্দিন, তার স্ত্রী ও সন্তানরা। পরে প্রতিবেশীরা আমাকে উদ্ধার করে বিয়ানীবাজার সরকারি হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক অবস্থা বেগতিক দেখে হাসপাতালে রেফার করেছে। এবাদ উদ্দিন ও তার স্ত্রী-সন্তানরা হামলার সময় আমার নগদ ১০ হাজার টাকা ও ২০ হাজার টাকা মূল্যমানের একটি স্মার্টফোন লুট করে নিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থতাবোধ করলে একদিন পর আমি বিয়ানীবাজার থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ জানাই এবং পরবর্তীতে মামলা দায়ের করি।

আব্দুল আহাদ আরও অভিযোগ জানান, আমার আপন বড়ভাই হলেও এবাদ উদ্দিন ভূ-সম্পত্তি দখল করার লোভে তিনি আমাকে প্রাণে হত্যার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এমতাবস্থায় ঘরে থাকা মানসিক রোগে আক্রান্ত আমার স্ত্রী ও সন্তানরা চরম উদ্বেগ এর উৎকণ্ঠায় দিনযাপন করছেন। এসব বিষয় বিবেচনায় জীবনের নিরাপত্তায় আইনের দ্বারস্থ হয়েছি।

এ ব্যাপারে বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায় বলেন, অভিযোগ পেয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আসামীদের ধরতে অভিযান চালানো হয়েছে। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত ৪ আসামির মধ্যে মঙ্গলবার দুপুরে আবু তাহের চৌধুরী নামের একজন গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

আমন ক্ষেতে পাতা মোড়ানো ও মাজরা পোকার আক্রমণে করণীয়