বিয়ানীবাজারে করোনা আতঙ্ক উপেক্ষা করেই দিন দিন বিভিন্ন মার্কেট ও বিপণী বিতানে বাড়ছে ভিড়। ঈদের বাজার করতে ক্রেতারা মানছেন না স্বাস্থ্য সতর্কতা। এতে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বিয়ানীবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি মার্কেট বন্ধ রাখার ঘোষণা দিলেও তা মানতে রাজি নন অনেক ব্যবসায়ী।

জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর শর্ত সাপেক্ষে ১০ মে সরকারি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলে ব্যবসায়ীরা দোকান খুলতে শুরু করেন। পৌরশহরসহ উপজেলার বিভিন্ন মার্কেটে প্রতিদিনই দেখা যাচ্ছে ক্রেতা সমাগম। সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছেনা এসব স্থানে। নেই ক্রেতা-বিক্রেতা স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। বিয়ানীবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি ঈদ মাকেট বন্ধ রাখার ঘোষণা দিলেও তা মানছেন না অনেক ব্যবসায়ী। দোকান খোলা রাখার পাশাপাশি তারা মানছেননা স্বাস্থ্য সতর্কতা।

সরেজমিনে বিয়ানীবাজার পৌরশহর ও চারখাই বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পৌরশহরের আজির মার্কেটের বেশ কয়েকটি বস্ত্র বিতান, জুতার দোকান, ক্রোকারিজের দোকান, পোস্ট অফিস রোডের বেশ কয়েকটি দোকান, কলেজ রোড, নয়াগ্রাম ও মোকাম মসজিদ রোডের আরএ কয়েকটি দোকানে সকাল থেকে ক্রেতারা কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এসব দোকানগুলো সামাজিক দূরত্ব না মেনেই চলছে ঈদের কেনাকাটা। সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দোকানগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় লেগে আছে। দোকানে বিক্রেতাদের নেই সুরক্ষাসামগ্রী। ক্রেতারা আবার মাস্ক ও গ্লাভস ছাড়াই পোশাক কিনছেন। গাদাগাদি করে কেনাকাটা করায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। নারীরা শিশুদের নিয়েও এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পছন্দের পোশাক কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন তারা। উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হলেও ব্যবসায়ীরা তা মানছেন না। পুলিশ চলে যাওয়ার পরে আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে যায় ক্রেতা-বিক্রেতারা।

এ ব্যাপারে বিয়ানীবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোঃ আজাদ উদ্দিন বলেন, ‘জীবিকা নয়, জীবন আগে’- এ কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে বিয়ানীবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির নেতৃবৃন্দরা আলোচনা করে চলতি মে মাস মার্কেট বন্ধ রাখার সিন্ধান্ত নেন। তবে এ সিদ্ধান্ত না মেনে অনেকেই নিজেদের দোকানপাট খোলা রেখে ব্যবসা বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন তারা কেউই সমিতির সদস্য নয়। তিনি বলেন, তবুও আমরা সমিতির সদস্যরা মিলে সাধারণ মানুষের জীবন রক্ষার্থে ভাইরাসের সংক্রমণ যাতে না  ছড়িয়ে পড়ে সেজন্য সেসব ব্যবসায়ীদেরকে সচেতন হতে অনুরোধ জানিয়েছি। দোকান বন্ধ না রাখলেও যাতে তারা ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য প্রয়োজনীয় সুরক্ষার ব্যবস্থা রাখেন তা বলা হয়েছে। কিন্তু তারা কেউই এসব বিষয় কর্ণপাত করেনি। এক্ষেত্রে আমরা প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

বিয়ানীবাজার পৌরসভার মেয়র মোঃ আব্দুস শুকুর বলেন, মানুষকে ঘরে থাকার জন্য বলা হচ্ছে। খাদ্য সহায়তাসহ নানাভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ সামাজিক দূরত্ব না মানায় করোনা ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে ব্যবসায়ীদের আরও সচেতন হতে হবে। তারা সচেতন না হলে সাধারণ মানুষের ক্ষতি হবে।

‘এবি টিভি’র সর্বশেষ প্রতিবেদন-