বিয়ানীবাজারে চলছে কারেন্ট জাল বিক্রির রমরমা ব্যবসা। বর্ষা মৌসুম শুরু হবার পূর্বে থেকেই উপজেলার বৈরাগীবাজার, চারখাই বাজার, দুবাগ বাজার, বারইগ্রাম বাজার, সারপার বাজার, আছিরগঞ্জ বাজারসহ বিভিন্ন হাট বাজারে অবৈধ কারেন্ট জাল মজুদ করে রেখে রমরমা ব্যবসা চলিয়ে যাচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। আর এসব বাজার থেকে এক শ্রেণির মৎস্য ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ কারেন্ট জাল কিনে নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন হাওর, জলাশয়, খাল বিলসহ নতুন পানি জমে থাকা জলাশয়ে কারেন্ট জালের মাধ্যমে ডিমওয়ালা মা মাছ ও পোনা মাছ নিধন করে চলছেন।

সরকারি বিধি উপেক্ষা করে অসাধু ব্যবসায়ীরা স্থানীয় হাট-বাজারে কারেন্ট জালের অবাধ বাণিজ্য গড়ে তুলেছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের গুদামগুলোতে লক্ষ লক্ষ টাকার কারেন্ট জাল মজুদ রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। এছাড়াও এ মৌসুমে জলাশয়গুলোতে পোনা মাছ, ডিমওয়ালা মা মাছ ধরা বা কারেন্ট জালের ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকলেও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কারেন্ট জালের ব্যবসা ও জাল দিয়ে মাছ শিকার চলছে দেদারছে। বিষয়গুলো উপজেলা মৎস্য দপ্তর তদারকি করা কিংবা কারেন্ট জাল ব্যবহারকারী ও বিক্রয়কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার কথা থাকলেও খাল-বিলে পানি আসার পর থেকে অদৃশ্য কারণে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, উপজেলার স্থানীয় বৈরাগীবাজার থেকে অবৈধ কারেন্ট জালের ব্যবসা পুরো উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ছে। এছাড়াও আশপাশের উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে কারেন্ট জাল আসে বিয়ানীবাজারে। সপ্তাহে হাটবার ছাড়াও বিভিন্ন বাজারে প্রতিনিয়ত পাওয়া যাচ্ছে অবৈধ কারেন্ট জাল। একরকম খোলামেলা অবস্থায় এসব নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল বিক্রি হচ্ছে।

বন্যার পানি নামার সাথে সাথেই উপজেলার প্রতিটি খাল বিলে শুরু হয় পোনা মাছ নিধনের মহোৎসব। এখন শত শত জেলেকে কারেন্ট জালের সাহায্যে মাছ আহরণ করতে দেখা যায়। বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতারা প্রকাশ্যে কারেন্ট জাল ক্রয়-বিক্রয় করছেন।

স্থানীয়রা জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে দেদারছে ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে অবৈধ কারেন্ট জাল। এই জাল ব্যবহার করে খালে-বিলে পোনা মাছ শিকার করছেন অনেকেই। দেশীয় প্রজাতির নানা প্রকার মাছের পোনাসহ ডিমওয়ালা মা মাছ এই জালের ফাঁদে আটকা পড়ে। আর এ কারণে দেশীয় প্রজাতির অনেক মাছ এখন বিয়ানীবাজারে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানের মাছের আড়তে ছোট ছোট মাছ বিক্রি হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মাছ শিকারি বলেন, স্থানীয় বৈরাগীবাজার থেকে তিনি মলা ও পুঁটি এই দুই প্রজাতির ছোট মাছ ধরার জন্য আধা কেজি করে দুই কেজি কারেন্ট জাল ক্রয় করেছেন। তার এলাকার বিভিন্ন জলাশয়ে মাছ শিকার করতেই তিনি কারেন্ট জাল কিনছেন।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. হাসিবুল হাসান বলেন, কারেন্ট জালের অবাধ ক্রয়-বিক্রয় বন্ধে আমরা সতর্ক রয়েছি। কয়েকদিন আগেও জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষে কারেন্ট জাল এবং মা ও পোনা মাছ নিধন বন্ধে আমরা বৈরাগীবাজারে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল বিক্রি বন্ধে অভিযান চালিয়ে দুইজন ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেছি। আমরা প্রতিটি হাটবাজারে এমন অভিযান অভিযান অব্যাহত রাখবো। একইসাথে আমরা মা ও পোনা মাছ শিকার বন্ধে স্থানীয়দের সচেতনতামূলক প্রচারণার পাশাপাশি সতর্কতা প্রদান করে আসছি।

‌শখের বশে পেয়ারা চাষে সাফল্য