দুই দিনের তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছে বিয়ানীবাজারসহ সিলেটবাসীর জনজীবন। প্রখর রোদ ও ভ্যাপসা গরম একদিকে জীবনে ভোগান্তি বাড়াচ্ছে; অন্যদিকে রাতে কিছুটা শীত অনুভূত হওয়ায় বিয়ানীবাজার উপজেলাসহ আশপাশের অঞ্চলজুড়ে জ্বর-সর্দির প্রকোপ বাড়ছে। সাধারণ জ্বর-সর্দির সঙ্গে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মিল থাকায় এ নিয়ে অস্বস্তিতে পড়ছেন অনেকে। কেউ কেউ করোনা নিয়ে আতঙ্কিতও হচ্ছেন। তবে জ্বর-সর্দির কারণে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার আহবান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

বর্ষা পেরিয়ে শরতের মাঝামাঝি এসেও বিয়ানীবাজার উপজেলাসহ সিলেটে প্রায়ই বৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু গরম কমছে না। গত শুক্রবার থেকে অসহনীয় গরম অনুভূত হচ্ছে। গতকাল শনিবার গরমের সঙ্গে প্রখর রোদ জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলে। তীব্র গরমে গতকাল সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন জীবিকার টানে বাইরে বেরোনো লোকজন। বিশেষ করে শ্রমজীবীরা পড়েন বেকায়দায়। তীব্র রোদ থেকে বাঁচতে অনেককেই গাছ এবং অন্যান্য স্থাপনার ছায়ায় বসে থাকতে দেখা যায়। খুব জরুরি না হলে বের হচ্ছেন না কেউ ঘরের বাইরে। যেসব কর্মজীবি মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন, তারাও অতিরিক্ত গরমে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। গরম বাতাস শরীরে লাগছে আগুনের ঝাপ্টার মতো। ঘরে-বাইরে কোথাও কোনো স্বস্তি নেই। বিশেষ করে গরমে সবচেয়ে বেশি কাতর হয়ে পড়ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা।

এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে রবিবার রাত থেকে সিলেটে বৃষ্টি নামতে পারে। সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, শনিবার সিলেটে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাই এত গরম অনুভূত হয়েছে। রবিবার সারাদিন এরকম গরম থাকবে। তবে রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হবে। তখন তাপমাত্রা কিছুটা কমবে।

দিনে তীব্র গরম পড়লেও রাতে কিছুটা শীত অনুভূত হচ্ছে। তাই তাপমাত্রার এই তারতম্যের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছেন না অনেকে। তাতেই ঠাণ্ডা লেগে অনেকে সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। শ্বাসনালীর সংক্রমণে কাবু হচ্ছেন অনেকে।

মাথিউরা নালবহর গ্রামের আব্দুল করিম বলেন, আমার পরিবারের সবাই জ্বরে আক্রান্ত। করোনার সময় জ্বর হওয়ায় কিছুটা আতঙ্কিত হয়েছি। পরবর্তীতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেয়েছি। এখন কিছুটা সুস্থ বোধ করছি। তিলপাড়ার দেবারাই গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হোসেন আজাদ জিসান বলেন, গত সপ্তাহের প্রথম দিকে আমার জ্বর ও সর্দি হয়। তবে এখন কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠলেও শারীরিকভাবে দুর্বলতাবোধ করছি।

করোনার উপসর্গের সঙ্গে সাধারণ সর্দি-জ্বরের লক্ষণের মিল থাকায় অনেকে সাধারণ জ্বর-সর্দিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বলে সন্দেহ করে আতঙ্কিত হচ্ছেন। তবে আতঙ্কিত না হয়ে প্রয়োজনে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

এ বিষয়ে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আবু ইসহাক আজাদ বলেন, সব জ্বর করোনার লক্ষণ হয়। তাই আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। সাধারণত কেউ করোনা আক্রান্ত হলে তিনি শারীরিকভাবে অতিরিক্ত দুর্বল হয়ে পড়বেন। তার স্বাভাবিক কাজকর্ম করার শক্তি থাকবে না। এছাড়া তার মুখের স্বাদ ও ঘ্রাণশক্তি চলে যেতে পারে। এসব লক্ষণ ছাড়া যাদের সাধারণ জ্বর, সর্দি বা কাশি হয়েছে এটা সিজোনাল ফ্লু। বছরের এই সময়টায় আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এসব সিজোনাল ফ্লু হয়ে থাকে। তাই বলব আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।

চারখাইয়ে ডিএলএস প্রবাসী ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের অভিষেক, সংবর্ধনা ও উপহার বিতরণ