বিয়ানীবাজারসহ সিলেটের বিভিন্ন উপজেলার গ্রামগঞ্জে বিল-বাদাড়, পুকুর সেচ দেওয়ার পর মাছ ধরার প্রক্রিয়াকে স্থানীয় ভাষায় বলা হয় ‘খাইঞ্জা হিছা’। আর ‘খাইঞ্জা হিছা’ বা সেচ দেওয়ার সময় যখন পানি একেবারে শুকিয়ে তলানিতে চলে যায় তখন মাছের লাফালাফি দেখার মতো। শীতের শেষ থেকে চৈত্রের শেষ সময় পর্যন্ত বিয়ানীবাজারের গ্রামাঞ্চলের বিল-বাদাড়, জলাশয় ও জমির ডোবাগুলোতে ‘খাইঞ্জা হিছা’র ধুম পড়েছে। দিনের শুরু থেকে শেষ বিকেলে কোথাও না কোথাও জলাশয় সেচ দিয়ে মাছ শিকার করতে দেখা যায় স্থানীয়দের।

হাতে মাছ ধরা ছাড়াও ব্যবহার করে থাকেন জাকিজাল (উড়াল জাল), পেলইন জাল (ঠ্যালা জাল), পলো প্রভৃতি মাছ ধরার উপকরণ। বিশেষ করে শিশু-কিশোররা খালি হাতেই খালে-বিলে নেমে যায় মাছ ধরতে। দেশি জিওল মাছ অর্থাৎ কৈ, মাগুর, শিং, টাকি, ট্যাংরা, বড় বাইম, বাইম চিক্রি, পুঁটি, মখা (মলা), শোল, গজার, আইড় মাছসহ দেশি জাতের মাছই ধরা পড়ে বেশি। তাছাড়া ধরা পড়ে ফিশারিসহ বিভিন্ন জলমহালের মাছও। এগুলো মূলত বর্ষার সময় খাল-বিল, ডোবায় বা নিচু জলাভূমিতে আশ্রয় নেয়।

শীতের শেষ সময়ে বিয়ানীবাজারের গ্রামাঞ্চলে এখন মাছ ধরার ধুম চলছে। বিশেষ করে ‘খাইঞ্জ হিছা’য় বা সেচে অল্প পানি থাকলে ‘হেওত’ (বাঁশের লাঠির সমন্বয়ে বা বেত বা টিনের তৈরি এক প্রকার সেচ উপকরণ) দিয়ে শুকিয়ে নেওয়া হয়। আর জলাশয়ে পানির পারিমাণ বেশি থাকলে মেশিন বসিয়ে সেচ দিয়ে শুকিয়ে নেওয়া হয়। এর বাইরেও বিল বাদাড়ে পলো দিয়ে মাছ ধরা বা ‘পলো বাওয়া’ উৎসব হয় গ্রামের হাওরে-জলাশয়ে।

শনিবার দুপুরে বিয়ানীবাজার উপজেলায় মাথিউরা ইউনিয়নের পশ্চিমপার এলাকার একটি জলাশয়ে মাছ ধরতে দেখা গেছে সাংবাদিক সুয়াইবুর রহমান স্বপন ও তার ছোটভাই যুক্তরাজ্য প্রবাসী ওয়াহিদুর রহমান শাকিলসহ আরও কয়েকজন শৌখিন মাছ শিকারীকে।

সাংবাদিক সুয়াইবুর রহমান স্বপন বলেন, প্রতি বছর এমন দিনে জলাশয় ও বিলে বাদালে খাইঞ্জা হিছার মাধ্যমে শৌখিন মাছ শিকারীরা মাছ ধরে থাকেন। অনেক জলাশয়ে আবার এলাকার বহু মানুষের ভাগ আছে। আর তাই বেশির ভাগ বিল, হাওর বা অনাবাদি জমিতে মাছ পাওয়ার আশায় মানুষ আগে থেকে গর্ত করে রাখেন যেন বর্ষা মৌসুমে মাছ এসে জড়ো হয়।

একইভাবে সিলেটের অন্য উপজেলাগুলোর হাওর, বিল-বাদাড়েও এভাবে মাছ ধরা হয়।

নাগালের বাইরে ভোজ্যতেল, সস্তা সবজি-মাছের বাজার।। সাপ্তাহিক বাজারদর