বিয়ানীবাজারের পল্লীতে রাস্তা ও ঘর নির্মাণ সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় একই পরিবারের প্রতিবন্ধি যুবকসহ তিনজন আহত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে চিকিৎসা করান প্রতিবেশিরা। রোববার বিকালে উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের বড় বেজগ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের বড় বেজগ্রাম এলাকার মৃত জমির উদ্দিনের স্ত্রী আছারুন নেছা (৫৯), তার মেয়ে শাহেলা বেগম (৩২) ও প্রতিবন্ধি ছেলে রাসেল আহমদ (৩০)।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মাথিউরার বড় বেজগ্রাম এলাকার প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা জমির উদ্দিনের পরিবার গরিব ও হতদরিদ্র। তিন ছেলে ও ৬ মেয়েকে নিয়ে স্বামী জমির উদ্দিনের রেখে যাওয়া সামান্য একটু জমিতে ভাঙ্গাচোরা ঘরে বসবাস করে আসছেন স্ত্রী আছারুন নেছা। এলাকার বিত্তশালী ও আত্মীয়-স্বজনদের সহায়তায় পরিবারের প্রয়োজনে স্বামীর মৌরসি ও ক্রয়কৃত জমিতে নতুন ঘর নির্মাণ শুরু করেছেন। কিন্তু তাতেই বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছেন প্রতিবেশি আমির উদ্দিন গংরা। চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে দাবি করে তারা আছারুন নেছার নতুন ঘর নির্মাণে বাঁধা প্রদান করেন। এক পর্যায়ে বিষয়টি মাথিউরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান-মেম্বার ও ইউনিয়নের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের হস্তক্ষেপে উভয়পক্ষের সম্মতিক্রমে বসতবাড়ির পশ্চিমপাশে সকলের চলাচলের জন্য রাস্তা নির্মাণ এবং আছারুন নেছার নতুন ঘর নির্মাণে বাঁধা প্রদান না করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এরপর রোববার সকালে নতুন ঘরের নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরু করলে ওইদিন সন্ধ্যায় আমির উদ্দিন গংরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আছারুন নেছা ও তার দুই ছেলে-মেয়ের উপর হামলা চালায় আমির উদ্দিন, তার ছেলে সুমন আখতার ও পরিবারের লোকজন। বাঁশের লাটি ও রড দিয়ে পিটিয়ে তাদেরকে আহত করে নির্মানাধীন ঘরে হামলা, ভাংগচুর চালায় এবং নির্মাণ সামগ্রি লুট করে। এ সময় আহতদের চিৎকারে প্রতিবেশিরা এগিয়ে আসলে হামলাকারিরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। প্রতিবেশিরা আহতদের উদ্ধার করে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা প্রদান করেন।

অভিযোগ রয়েছে, প্রায় সময়ই আছারুন নেছার ও তার পরিবারকে নানাভাবে হয়রানি করতো আমির উদ্দিন গংরা। এলাকার লোকজন জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে আমির উদ্দিন ও তার পরিবার নানাভাবে মৃত জমির উদ্দিনের পৈত্রিক ও মৌরসি জমি নিয়ে তার অসহায় পরিবারকে হয়রানি করতো। এ নিয়ে এলাকায় একাধিক সালিশ হয়েছে। কিন্তু এরপরও আমির উদ্দিন ও পরিবারের লোকজন জমির উদ্দিনের পরিবারের নতুন ঘর নির্মাণে বাঁধা দেয়ার চেষ্টা চালায়।

এই ঘটনায় রোববার রাতে বিয়ানীবাজার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মৃত জমির উদ্দিনের মেয়ে শাহেলা বেগম। অভিযোগ পাওয়ার পর সোমবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশের একটি দল।

মৃত আমির উদ্দিনের পরিবারের সবকটি অভিযোগ অস্বীকার করে বিবাদী আমির উদ্দিন ও তারা ছেলে সুমন আখতার বলেন, আমরা তাদের ওপর হামলা চালাইনি। উল্টো তারাই যেচে পড়ে আমাদের উপর হামলা চালায় এবং ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এই ঘটনায় আমরা বিয়ানীবাজার থানায় অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ আমাদের অভিযোগ গ্রহণ করেনি।

এ ব্যাপারে বিয়ানীবাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মেহেদী হাসান জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সালিশ ব্যক্তিত্বরা দেখছেন। যদি স্থানীয় সালিশে বিষয়টি মীমাংসা না হয়, আর ভুক্তভোগী পরিবার থানায় মামলা দায়ের করলে আমরা প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

জুড়ীতে কয়েক হাজার মানুষের বাঁশের সাঁকোই ভরসা, ব্রীজ নির্মানের দাবী