বিয়ানীবাজার উপজেলার মুড়িয়া ইউনিয়নের চন্দ্রগ্রামে গুলি করে শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে এক প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। মুখোশ পরা ডাকাত সদস্যরা এলাকায় আতংক ছড়াতে বন্দুকের তিন রাউন্ড গুলি ছুড়ে। তারা আব্দুল আজিজ দুদু’র ঘর থেকে ২৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও ২টি মোবাইল ফোন লুট করে পালিয়ে যায়। ডাকাতের ছোড়া গুলিতে রাসেল নামের এক যুবক আহত হয়েছেন।

খবর পেয়ে রাতে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশের টহলদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। গতকাল রবিবার সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত, বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী এবং ওসি তদন্ত আবুল বাশারসহ একদল পুলিশ এবং শিক্ষামন্ত্রীর এপিএস মাকসুদুল ইসলাম আউয়াল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী, এলাকাবাসী ও গৃতকর্তা দুদু জানান, ঘরের কলাপসিবল গেইটের তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে ঘরের কয়েকটি দরজা ভেঙ্গে ফেলে সশস্ত্র ১২/১৩ জনের ডাকাত দল। এসময় ঘরের ভেতরে থাকা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আব্দুল আজিজ দুদু, তার প্রবাসী ছেলে তারেক আহমদ এবং ভাংগা রেজওয়ান ডাকাতের উপস্থিতি বুঝতে পেরে চিৎকার করেন। ডাকাত সদস্যরা আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে একটি ঘরে আটকে রাখে। ঘরে থাকা মহিলাদেরর জিম্মি করে সশস্ত্র ডাকাত সদস্যরা। এ সময় তারা ঘরের আলমারি ভেঙ্গে ২৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও দুইটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। পালানোর সময় ডাকাত সদস্যরা পর পর তিন রাউন্ড বন্দুকে গুলি ছোড়ে।

আব্দুল আজিজ দুদু বলেন, ডাকাত সদস্যের হাতে বন্দুক, দা ও লোহা জাতীয় অস্ত্র ছিল। তারা আমাদের চিৎকার করলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। ডাকাতি ঘটনার খবর শুনে প্রতিবেশিরা এগিয়ে আসলে ডাকাতরা গুলি ছোড়ে। প্রায় ২০ মিনিট তারা ঘরে ভেতরে অবস্থান করে। তার প্রবাসী ছেলে তারেক গত ২৩ এপ্রিল বিয়ে করেছে। এসময় বাড়িতে আত্মীয়রা অবস্থান করেন। তাদের ব্যবহারিক স্বর্ণ ডাকাতরা ছিনিয়ে নেয়।

গুলিতে আহত যুবক রাসেল বলেন, চিৎকার শুনে আমরা এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে ডাকাতরা আমাদের লক্ষ্য করে তিন রাউন্ড ছোড়ে বাড়ির ডান পাশের রাস্তা দিয়ে পালিয়ে যায়। ডাকাতের ছোড়া গুলির একটি স্পেন্ডার তার গলার নিচে আঘাত করে।

বাড়ির কেয়ারটেকার  আজহারুল ইসলাম বলেন, আমি বাড়ির বাইরের ঘরে থাকি। চিৎকার শুনে বের হতেই দুইজন ডাকাত আমাকে গালি দিয়ে নিরব থাকতে বলে। এসময় একজনের হাতে বন্দুক ও অন্যজনের হাতে দা ছিল। ডাকাতদের টর্চ লাইটের আলোর বাড়ি উঠানে আরও সশস্ত্র অবস্থার ৭/৮ জনের ডাকাত দলকে দেখতে পাই। তাদের সকলের হাতে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ছিল। ডাকাতদের কয়েজন সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় এবং কয়েক প্রণীত ভাষায় কথা বলতে তিনি শুনেছেন। তারা বয়সে সবাই তরুণ।

সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত বলেন, ঘটনার আলামতে মনে হচ্ছে স্থানীয় কোন চক্র এ ঘটনায় সম্পৃক্ত রয়েছে। আমরা ডাকাতি ঘটনার সাথে কারা জড়িত তাদের বের করতে তৎপর রয়েছি। সম্ভাব্য জায়গায় পুলিশ অভিযান চালাবে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ সক্ষম হবে।