দেশে নারী শ্রম শক্তির মধ্যে ৬৮ শতাংশই কৃষি, বনায়ন ও মৎস্য খাতের সাথে জড়িত। কর্মক্ষম নারীদের মধ্যে কৃষি কাজে সবচেয়ে বেশি নারী নিয়োজিত রয়েছেন। বলা চলে- কৃষি ও এর উপখাতের মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে নারী।

সিলেটের বিয়ানীবাজার ধর্মীয়ভাবে রক্ষণশীল এবং প্রবাসী অধ্যুষিত একটি উপজেলা। এ উপজেলার বর্তমান জনসংখ্যা ২ লক্ষ ৫৩ হাজার ৬১৬ জন। তম্মধ্যে, নারী ১ লক্ষ ২৯ হাজার ৬৭৭ জন। অত্র উপজেলায় প্রায় ৪০ হাজার এর ও অধিক কর্মক্ষম নারী রয়েছেন। তাদের অধিকাংশই কৃষি কাজের সাথে তেমন সম্পৃক্ত নন। এর প্রধানতম কারন ধর্মীয় রক্ষণশীলতা, প্রবাসগামীতা, আর্থিক স্বচ্ছলতা বেশি ইত্যাদি। সম্প্রতি স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে নারীকে কৃষি কাজে অধিকতর সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে ‘‘কৃষি উন্নয়নে নারী’’ শ্লোগানকে সামনে রেখে বিয়ানীবাজারে কৃষাণী সমবায় সমিতি গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে কৃষাণি সমবায় সমিতি গঠন করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী আরিফুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। বিশেষ ঘরে বাহিরে কার্যকর্মে নারীদের উপস্থিতি খুবই কম। সে কথা বিবেচনা করে নারীদের কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করতে উপজেলার সামগ্রিক উন্নয়ন ঘটাতে এ উদ্যোগ। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চ এই সময় মূলত আমরা এ উদ্যোগ নিই। শুরুতে আশাজাগানিয়া সাড়া পেয়েছি। এখানকার নারীরা যে সর্বক্ষেত্রে সফলতার রাখতে পারেন তারই প্রমান তাদের সম্পৃক্তকরণে প্রয়াস।

কৃষি কর্মকর্তা পরেশ চন্দ্র দাস বলেন, প্রত্যকের বাড়ির আশ-পাশে পরিত্যাক্ত জায়গায় শাক-সবজি, ফলমূল ইত্যাদি চাষাবাদেও প্রচুর জায়গা রয়েছে। আমরা সেসব জায়গাগুলো কাজে লাগাতে চাই। এজন্য প্রাথমিক পর্যায় গ্রুপভিত্তিক চাহিদা নিরূপন, উঠান বৈঠক ইত্যাদি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, নারী কৃষক সমবায় সমিতি গঠনের পাশাপাশি নারী কৃষি শ্রমিকদের নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র প্রদান, একই ধরনের কাজে পুরুষের সমান মজুরী নিশ্চিত করা, বেশি কাজে বেশি সম্মান স্বীকৃতি, সরকারী কৃষি কর্মকান্ডে নারীদের অগ্রাধিকার দেয়া, কৃষি কাজে নারী শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা, প্রান্তিক সুবিধাদি ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে নারী কৃষি শ্রমিক তথা কৃষানীদের অগ্রাধিকার দেয়া সহ আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে।