বিয়ানীবাজার থানা সদরের উপকণ্ঠের একটি গ্রাম, অথচ দেখলে মনে হয় বিচ্ছিন্ন কোনো জনপদ। মাত্র তিন কিলোমিটার দীর্ঘ একটি চলাচল উপযোগি সড়কের অভাবে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এই গ্রামের মানুষদের।

গ্রামের নাম পূর্ব সদরপুর নওয়াগ্রাম। উপজেলার তিলপাড়া ও মোল্লাপুর ইউনিয়নের বিলুপ্ত জমাদার খালের ওপর ও আশপাশে গড়ে ওঠা একটি জনপদ এটি। তিলপাড়া ইউনিয়নের সদরপুর ও মোল্লাপুর ইউনিয়নের কটুখালিপাড় এলাকার মধ্যস্থল হচ্ছে এ গ্রাম। আর এ গ্রামের উভয় দিকে যাতায়তের জন্য একমাত্র এ কাঁচা সড়কটি দীর্ঘদিন থেকে বেহাল দশা।  যান চলাচল তো দূরের কথা, হেঁটে চলাও দুষ্কর হয়েছে উঠেছে এ সড়কে।

একটু বৃষ্টি হলেই কাদায় একাকার হয়ে যায় এ সড়ক, বর্ষা মৌসুমে তলিয়ে যায় পানিতে। ফলে কাদাজল মাড়িয়ে গ্রাম থেকে বেরিয়ে আসতে হয় সহস্রাধিক বাসিন্দাদের।

কেউ অসুস্থ হলে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় এ গ্রামের মানুষদের। জরুরী মুহূর্তে দ্রুত বেরিয়ে আসারও কোন উপায় নেই কারো। আর স্কুল-কলেজে যাওয়া শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিনই এই হাঁটুময় কাদামাখা পথ ডিঙিয়ে যেতে হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। তাছাড়া গ্রামের একমাত্র মসজিদে যেতেও দুর্ভোগ পোহাতে হয় স্থানীয় মুসল্লিদের। অথচ মাত্র তিন কিলোমিটার এ সড়কটি চলাচল উপযোগি করা গেলেই দুর্ভোগ ঘুচতো এ গ্রামের বাসিন্দাদের!

[image link=” http://beanibazarnews24.com/wp-content/uploads/2019/08/noyapara-new.jpg” img=” http://beanibazarnews24.com/wp-content/uploads/2019/08/noyapara-new.jpg” caption= ” মাত্র তিন কিলোমিটার কাঁচা সড়কে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সহস্রাধিক মানুষ “]

ভোট এলেই প্রার্থীদের কাছে কদর বেড়ে যায় এ এলাকাবাসীর। নানান সময়ে প্রার্থীরা সড়কটি সংস্কার প্রতিশ্রুতি দিলেও দীর্ঘ এক দশকেও দৃশ্যত কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এ সড়কে।

গ্রামের বাসিন্দা নালবহর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী রুমা বেগম জানান, ‘প্রতিদিন স্কুলের যাবার সময় আমাদের স্কুল ড্রেস, জামা-কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। স্কুল ড্রেস অনেক সময় নষ্ট হয়ে যাবার ফলে প্রতিদিনই ধৌত করতে হয়। তাই একাধিক স্কুল ড্রেস না থাকায় পরের দিন স্কুলে যেতে পারি না। অনতিবিলম্বে এ সড়কটি সংস্কারের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের যাবার পথ সুগম করার দাবি জানাচ্ছি।’

এ গ্রামের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণ আব্দুস সোবহান জানান, ‘নির্বাচনের আগে এখানকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আমাদের গ্রামের সড়কটি চলাচল উপযোগি করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার কোন বাস্তবায়ন ঘটেনি। ফলে গ্রামের মানুষদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’

দুর্ভোগ আর দুর্দশা থেকে পরিত্রাণ পেতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এলাকাবাসীর একটাই দাবি- দুই ইউনিয়নের একমাত্র সংযোগ সড়কটি যেন দ্রুত চলাচল উপযোগি করতে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব বলেন, সড়কের অবস্থা সত্যিই খুবই নাজুক। এটি সংস্কার করা একান্ত প্রয়োজন। তাই এতদাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে যত দ্রুত সম্ভব আমরা এ সড়কটি চলাচল উপযোগি করার চেষ্টা করবো।