সারাদেশের ন্যায় বিয়ানীবাজার উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গ্রেড পরিবর্তনের দাবিতে চার দিন ধরে টানা  কর্মসূচি পালন করেছেন সহকারী শিক্ষকরা। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সারাদেশে পূর্ণ কার্যদিবস কর্মবিরতি পালন করা হয়। এর আগে গত সোমবার ২ ঘন্টা, মঙ্গলবার ৩ ঘন্টা ও বুধবার অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেন তারা। কর্মবিরতি চলাকালে বেশিরভাগ স্কুলের শিক্ষকরা শ্রেণীকক্ষে পাঠদান বন্ধ রাখায় বিপাকে পড়ে শিক্ষার্থীরা।

উপজেলার কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে কিংবা শিক্ষক মিলনায়তনে বসে কর্মবিরতি কর্মসূচি পলান করছেন। শিক্ষকদের কর্মবিরতি পালনে শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে উপস্থিত হলেও স্যাররা ক্লাস করাবেন না শুনে অনেকে বাড়ি চলে গেছে। অনেককে আবার স্কুল মাঠে খেলাধুলা করতে দেখা গেছে। কেউ কেউ আবার ক্লাসের বেঞ্চে মাথা রেখে ঘুমাতে কিংবা সহপাঠীদের সাথে আড্ডায় ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে। শিক্ষার্থীরা জানান, শিক্ষকরা ক্লাসে আসছেন না, সেজন্য ক্লাস বন্ধ। তাই আমরা ক্লাসে বসে গল্পগুজব করে সময় পার করছি। তবে বেশিরভাগ স্কুলে আন্দলনরত শিক্ষকরা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে পঞ্চম শ্রেণীর সমাপনীর শিক্ষার্থীদের পাঠদান অব্যাহত রেখেছেন।

বিয়ানীবাজারে শিক্ষকদের কর্মবিরতি আন্দোলরত কয়েকজন শিক্ষকের সাথে এ প্রতিবেদকের আলাপ হয়। তাদের মধ্যে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সফর উদ্দিন জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে বৈষম্য দূরীকরণে সরকারের পক্ষ থেকে বারবার আশ্বাস দেয়া হলেও তা আজো বাস্তবায়ন করা হয়নি।

তিনি আরো জানান, প্রধান শিক্ষকদের ১০তম গ্রেড ও সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড দিতে আমরা দীর্ঘদিন থেকে দাবি করে আসছি। কিন্তু পাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রধান শিক্ষকদের ১০তম গ্রেড দেয়া হলেও সহকারীদের ১২তম গ্রেড দিতে বলা হয়। এটিও সরকারের পক্ষ থেকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। এসব বিষয়ের প্রতিবাদ জানাতে আমার বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছি।

তিনি জানান, দাবি আদায় না হলে আগামী ২৩ অক্টোবর শিক্ষকরা রাজধানী ঢাকায় উপস্থিত হয়ে মহাসমাবেশে যোগ দেবেন। এরপরও দাবি আদায় না হলে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদ ঘোষণা অনুযায়ী তাদের নেতৃত্বে লাগাতার আন্দোলনে শিক্ষককরা নামবেন বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, টানা ৪ দিন ধরে সারাদেশের ন্যায় বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদ বিয়ানীবাজার উপজেলা শাখার ব্যানারে বিভিন্ন দাবিতে এই কর্মবিরতি শুরু হয়। দাবিগুলো হচ্ছে, প্রধান শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম ও সহকারী শিক্ষকদের ১৪তম গ্রেড থেকে ১১তম গ্রেড নির্ধারণ করা। এই দাবির প্রেক্ষিতে গত সোমবার ২ ঘন্টা, মঙ্গলবার ৩ ঘন্টা, বুধবার অর্ধ দিবস ও বৃহস্পতিবার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকরা। দাবি আদায় না হলে ২৩ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের মাধ্যমে শিক্ষক সংগঠন তাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে।