বিয়ানীবাজার উপজেলার মধ্যপ্রাচ্যফেরত প্রবাসীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। দু’দফা টিকেট করার পর বাতিল হয়ে যাওয়ায় আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন এসব প্রবাসীরা। প্রবাসীদের মধ্যে কারো ভিসার মেয়াদ, কারো টিকেটের মেয়াদ, কারো একামার মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে পড়ায় তারা ভোগান্তি ও ঋণগ্রস্ত হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। প্রবাসের কর্মস্থলে ফিরে যেতে এবং দেশে অবস্থানকালীন সময়ে সরকারের নিকট বিভিন্ন সহায়তা দাবি করে অনেক প্রবাসী কর্মী বিশেষ মানবিক ও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে অন্তর্ভূক্তিকরণের আবেদনও করেছেন।

জানা গেছে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশ থেকে ছুটিসহ নানা কারণে দেশে এসেছেন বিয়ানীবাজারের প্রায় অর্ধ সহস্রাধিক প্রবাসী কর্মী। বিয়ানীবাজার পৌরসভাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের অধিবাসী এসব প্রবাসীরা অর্থাভাব, দুর্ভোগ ও কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। পূর্বের কর্মস্থলে ফিরে যেতে এবং দেশে অবস্থানকালীন সময়ে সরকারের নিকট বিভিন্ন সহায়তা দাবি করে অনেক প্রবাসী কর্মী কর্মস্থান ও জনশক্তি অধিদপ্তরের বিশেষ মানবিক ও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে অন্তর্ভূক্তিকরণের আবেদনও করেছেন। তবে এসব আবেদনের ফল কিংবা সহায়তা কবে পাবেন- এসব নিয়েও সন্দিহান তারা।

প্রবাসীরা বলছেন, পরিবার-পরিজন ও সংসারের হাল ধরতে বিভিন্ন সময়ে আমরা কাতার, আরব-আমিরাত, বাহরাইন, ওমান, কুয়েত, সোদিআরব, মালয়েশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে শ্রমিক হিসেবে গমন করি। দীর্ঘদিন ধরে এসব দেশ সমুহে কাজ করে উপার্জিত আয়ের একটি বড় অংশ দেশে পাঠিয়ে পরিবার ও সংসারের ভরনপোষন চালিয়ে যাচ্ছি। ছুটিতে এসে করোনা মহামারীর কারণে অর্ধ সহস্রাধিক প্রবাসীরা বর্তমানে নানা জটিলতায় প্রবাসের কর্মস্থল দেশ সমুহে ফিরে যেতে পারছি না। কারো ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ, কারো টিকেটের মেয়াদ উত্তীর্ণ, কারো একামার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে পড়ছে। এই সময় পর্যন্ত আমরা ব্যাপক ঋণগ্রস্থ হওয়ায় চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিনাতিপাত করছি। বিভিন্ন ট্রেভেলস এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করলেও তারা সঠিক কোন তথ্যাদি পাচ্ছেন না। ফিরত টিকেট থাকার পরও এসব প্রতিষ্ঠান প্রচুর টাকা দাবি করছে বলে অভিযোগ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরব আমিরাতের আবুধাবি থেকে আসা তিলপাড়া ইউনিয়নের এক প্রবাসী অভিযোগ করে বলেন, গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর ৪ মাসের জন্য আবুদাবি থেকে দেশে আসি। চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল প্রবাসে ফেরত যাওয়ার জন্য একটি মাধ্যমের সহায়তায় প্রায় ত্রিশ হাজার টাকায় টিকিটও করি। পরে করোনা মহামারীর কারণে সেই টিকিট বাতিল হয়ে যায়। দ্বিতীয় দফায় সিলেটে গিয়ে করোনা রিপোর্ট সংগ্রহ করে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করে গত ১৯ আগষ্টের টিকিট করি। এরপর সে টিকিটও বাতিল হয়ে যায়।

মাথিউরা ইউনিয়নের বাসিন্দা প্রবাসী আব্দুল হালিম, সাব্বির আহমদ ও জয়নুল হক বলেন, দেশে আসার পর থেকে টাকা-পয়সা সব শেষ হয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ছি। তারপর বারবার খরচ করেও প্রবাসের কর্মস্থলে যেতে পারছি না। তাছাড়া বিমান অফিস এবং ৩/৪ দফা অনলাইনেও আবেদন করেছি। তবুও কোন কাজ হচ্ছে না। এখন নিঃস্ব হয়ে পড়ার উপক্রম হয়ে পড়ছি।

ছায়ফুল ইসলাম ও পলাশ আহমদ নামের আরও দুই প্রবাসী জানান, আমরা প্রবাসীরা নিজেদের পরিবারের হাল ধরলেও আমাদের সমস্যা নিয়ে কাউকে বলতেও পারছি না, সইতেও পারছি না। তারা দেশে আটকাপড়া প্রবাসী শ্রমিক হিসেবে মানবিক দিক বিবেচনা করে দেশে থাকাকালীন সময়ে প্রণোদনা ও সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ প্রদান এবং সরকারি উদ্যোগে প্রবাসে ফেরত যাওয়ার প্রয়োজনীয় সহায়তার দাবি জানান।

যুগোপযোগী নারী শিক্ষায় আলো ছড়াচ্ছে কসবা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়