দীর্ঘদিন ধরে সিলেট অঞ্চলের প্রতিটি সড়কে দ্বিগুণ ওজনের পণ্য নিয়ে গাড়ি চলাচল করছে। ফলে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয় সড়কগুলো। তাই সড়কগুলোতে অতিরিক্ত পণ্য বহন প্রতিরোধে সিলেটের ৫টি সড়কে বসানো হচ্ছে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র। এর মধ্যে রয়েছে সিলেট-শেওলা স্থলবন্দর সড়ক।

এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন হলে সড়ক সংস্কারের ব্যয় অনেকটা কমে আসবে। এছাড়া অতিরিক্ত পণ্য বহনের কারণে গাড়িগুলোকে গুনতে হবে জরিমানা।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সিলেটের যেসব সড়কে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক, সিলেট-ভোলাগঞ্জ সড়ক, সিলেট-শেওলা স্থল বন্দর সড়ক, সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক ও সিলেট বিমানবন্দর-বাদাঘাট বাইপাস চারলেন সড়ক।

সিলেট অঞ্চলে পাঁচ এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের মধ্যে প্রথমটি স্থাপতি হচ্ছে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের লামাকাজিতে। কেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে বলে জানান সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান। ১৫ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত কেন্দ্রটি অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে বলে তিনি জানান। দ্বিতীয় এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রটি বসানো হচ্ছে সিলেট-ভোলাগঞ্জ সড়কের ২৮তম কিলোমিটার এলাকায়। জমি নির্ধারণ করে এরই মধ্যে নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। স্টেশনটি নির্মাণ ব্যয় ১৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।

সিলেটের তৃতীয় এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র হচ্ছে শেওলা-সুতারকান্দি সড়কের তৃতীয় কিলোমিটার এলাকায়। ১৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে এটি স্থাপনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। চতুর্থ এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের হবে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের দরবস্ত এলাকায়। ঢাকা থেকে তামাবিল পর্যন্ত চারলেন (দুই সার্ভিস লেনসহ ৬ লেন) মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২৬১তম কিলোমিটার এলাকায় এটি স্থাপন করা হবে। এই কেন্দ্রটি নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সিলেট বিমানবন্দর-বাদাঘাট বাইপাস চারলেন সড়কের প্রস্তাবিত ডিপিপিতে আছে পঞ্চম এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রটি। এটি স্থাপনে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ কোটি টাকা।

সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে মহাসড়কে অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি জাতীয় মহাসড়কগুলো অতিরিক্ত লোড থেকে রক্ষা পাবে এতে সড়কের স্থায়িত্বকাল বাড়বে। বর্তমানে যে সড়কের ওপর দিয়ে ১০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন যানবাহন চলাচলের কথা, কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় দ্বিগুণ থেকে আড়াইগুণ বেশি পণ্য পরিবহণ করা হচ্ছে। এতে সড়কগুলোর স্থায়িত্ব কমছে। ফলে সড়কের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় প্রতি বছর বাড়ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এ অবস্থার অবসান হবে।

জানা গেছে, দেশব্যাপী ‘সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতাভুক্ত গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে পণ্য পরিবহণের উৎসমুখে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। ১৬৩০ কোটি ২৭ লাখ ৯১ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২২ সালের ৩০ জুনের মধ্যে শেষ করার কথা। এর ধারাবাহিকতায় চলতি বছর সারা দেশে কয়েকটি এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিয়েছে সরকার। টেকসই, নিরাপদ ও ব্যয় সাশ্রয়ী (পরিবহণ ব্যয় ও সময়) সড়ক অবকাঠামো ও সমন্বিত যোগাযোগ নিশ্চিত করতে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন হচ্ছে।

উপজেলা কৃষকলীগের আহ্বায়ক সামাদের উপর হামলার প্রতিবাদে বিয়ানীবাজারে বিক্ষোভ মিছিল